পাতা:জোড়া পাপী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
দারোগার দপ্তর, ২০৪ সংখ্যা।

 “সে সকল কথা সকলের সমক্ষে বলা উচিত নহে।”

 “তবে আসুন, বাড়ীর ভিতরে আসুন।”

 এই বলিয়া আমাকে লইয়া বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিলেন এবং নীচের একখানি ঘরে বসিতে অনুরোধ করিলেন।

 নরেন্দ্রবাবুকে দেখিয়া এবং তাঁহার সহিত কথাবার্তা কহিয়া তাহাকে অতি সজ্জন বলিয়াই বোধ হইল। তিনি যে সেই ভয়ানক হত্যাকাণ্ডে যোগদান করিবেন, তাহা আমার বিশ্বাস হইল না। কিন্তু একবার প্রবঞ্চিত হইয়া তাহার ন্যায় দেব চরিত্রের উপরেও সন্দেহ জন্মিল। ঈষৎ হাসিয়া বলিলাম, আপনার একখানি পাখা অমর হস্তগত হইয়াছে। তাহাতে আপনার নাম ধাম লেখা আছে। সেই লেখা দেখিয়া আমি এতদুরে আসিয়া আপনার সন্ধান পাইয়াছি।”

 নরেন্দ্রনাথ অধিকতর অশ্চর্যান্বিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমার পাখা? আমার এক প্রজা আমায় দুইখানি করিয়া তালপাখা দিয়া থাকে। আমি প্রতিবারই উহাদের উপর নিজের নাম ধাম লিখিয়া থাকি। কিন্তু আমার পাখা আমাদের বাড়ীতেই ত আছে।”

 আমি বলিলাম, “আপনি অনুগ্রহ করিয়া একবার দেখিয়? আসুন, আপনার পাখা ঘরে আছে কি না?”

 নরেন্দ্রনাথ তখনই বাড়ীর ভিতর গমন করিলেন এবং অনতিবিলম্বে প্রত্যাগমন করিয়া বলিলেন, “না মহাশয়! দুইখানি পাাখার মধ্যে একখানি রহিয়াছে—অপরানি আমার স্ত্রী এক দূর-সম্পর্কীয়া ভগিণীকে দিয়াছেন। সম্ভবতঃ সেই পাখাখানিই আপনি দেখিয়া থাকিবেন।”