পাতা:জ্ঞাতি শত্রু - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জ্ঞাতি-শত্রু।
৪৭

 কিছুক্ষণ কোন কথা না কহিয়া পরে আমি অতি গোপনে বলিলাম, “কতলোকে যে কত কথা বলিতেছে, তাহার স্থিরতা নাই। কেহ বলিতেছে, কোন জ্ঞাতিই তাঁহাকে হত্যা করিয়াছেন, কেহ বা বলিতেছে, শক্তিবাবুই তাঁহার দাদার কোন খাদ্য দ্রব্যের সহিত বিষ মিশাইয়া তাঁহাকে হত্যা করিয়াছেন। কাহার কথাই বা বিশ্বাস করি?”

 আমার শেষোক্ত কথাগুলি শুনিয়া ডাক্তার বাবু স্তম্ভিত হইলেন। কিছুক্ষণ পরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “সত্য না কি? শক্তির উপরে সন্দেহ করিতেছে?”

 আ। আজ্ঞে হাঁ, তাঁহারা বলেন, তিনি কেমন করিয়া জানিতে পারিলেন যে, তাঁহার দাদার কোন খাদ্যদ্রব্যের সহিত বিষ মিশ্রিত ছিল?

 ডাক্তার বাবু ঈষৎ হাসিয়া উত্তর করিলেন, “এই কারণ? হরিসাধনের সহসা মৃত্যু হওয়ায় তাঁহার ভ্রাতা, স্ত্রী বা অন্য কোন আত্মীয়ের সন্দেহ না হইবে কেন? বিশেষতঃ আহারের পূর্ব্বে তিনি বেশ সুস্থ ছিলেন। আহার করিবার পরই রোগের সূত্রপাত হয়।”

 আমি অতি বিনীত ভাবে বলিলাম, “সন্দেহ হইতে পারে কিন্তু সন্দেহ করিয়া থানায় সংবাদ দিতে সাহস হয় কি? পুলিসের গোচর করা নিতান্ত সহজ কথা নহে। যদি প্রমাণিত না হইত, তাহা হইলে শক্তিবাবু সহজে নিষ্কৃতি পাইতেন না। সকলেই বলিতেছে, তিনি ঐ বিষয় নিশ্চয়ই জানিতেন। না জানিলে, কেবল সন্দেহ মাত্র করিয়া তিনি থানায় সংবাদ দিতে সাহস করিতেন না।”