জ্ঞাতি-শত্রু।
পরে অতি বিনীতভাবে বলিলেন, “আমার জ্যেষ্ঠ আজ বেলা দশটার পর মারা পড়িয়াছেন। লোকে বলিতেছে, তিনি ওলউঠা রোগেই মারা পড়িয়াছেন। আমার কিন্তু সেরূপ মনে হয় না। আমার কেন, আমার ভ্রাতৃবধূর পর্য্যন্ত ভয়ানক সন্দেহ হইয়াছে।”
যে ভাবে যুবক ঐ কথাগুলি বলিলেন, তাহাতে আমারও কেমন সন্দেহ হইল। ঘটনা কি? কিরূপ অবস্থায় যুবকের ভ্রাতার মৃত্যু হইয়াছে? কিছুই জানিলাম না, অথচ তাঁহার কথা শুনিয়াই কেমন সন্দেহ জন্মিল। জিজ্ঞাসা করিলাম, “আপনার জ্যেষ্ঠের নাম কি?”
যুবক উত্তর করিলেন, “হরিসাধন বন্দ্যোপাধ্যায়।”
আ। আপনার নাম?
যু। শক্তিসাধন বন্দ্যোপাধ্যায়।
আ। আপনাদের নিবাস কোথায়?
যু। বাগবাজারে।
আ। এ বৎসর চারিদিকেই কলেরার উপদ্রব। প্রতিদিন কতশত লোক ওলাউঠায় প্রাণ দিতেছে। সহর বলিয়া বিশেষ কিছু জানিতে পারা যায় না। আপনার জ্যেষ্ঠও সেই পথে গিয়াছেন; ইহাতে আপনার সন্দেহ হইল কেন?
যুবক আবার আমার মুখের দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন। পরে অতি মৃদুস্বরে বলিলেন, “সকল কথা না বলিলে, আপনি আমার সন্দেহের কারণ বুঝিতে পারিবেন না। কিন্তু এখন তাহা বলিবার উপায় নাই।”
আমি তাঁহার কথায় বিস্মিত হইলাম। জিজ্ঞাসা করিলাম, “কেন? উপায় নাই কেন?