পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
ঝঁশির রাণী।

জ্যোতিষী পুনর্বার বলিলেন, “এই বালিকা নিশ্চয়ই রাণী হইবে। সম্প্রতি ঝুঁশির মহারাজ শ্রীমন্ত গঙ্গাধর-রাও-বাবা-সাহেবের স্ত্রীবিয়োগ হইয়াছে। সেইখানে যদি এই কন্যার বিবাহ ঘটিয়া যায়, তবেই গ্রহের ফলাফল সাক্ষাৎ উপলব্ধি হইবে।” এই অশাপ্রদ কথা শুনিয়া মোরোপন্ত শ্রীমন্ত বাজীরাও-সাহেবের দ্বারা, ঝুঁশির মহারাজ গঙ্গাধর-রাওর সমীপে এই বিবাহের প্রস্তাব করিবার নিমিত্ত, জ্যোতিষীকে নিযুক্ত করিলেন। তাত্যা-দীক্ষিত, ঝুঁশির অধিপতি গঙ্গাধর-রাও-বাবা-সাহেবের নিকট গিয়া এই কন্যার সৌন্দর্য্যমহিমা ও গ্রহানুকূল্যের ব্যাখ্যা করিলে, তিনি “বিবেচনা করিয়া দেখিব” এই মাত্র উত্তর করিলেন। পরে, বাজী-রাওর সাগ্রহ মধ্যস্থতা-প্রভাবে তিনি কন্যাকে দেখিবার জন্য রাজ্যের কোন সভাসদমণ্ডলীকে বিযুরে পাঠাইলেন। তাহারা প্রত্যাগত হইয়া বাবা- সাহেবের নিকট কন্যার গুণানুকীর্ত্তন করায় গঙ্গাধর-রাও-বাবাসাহেব কন্যার পাণিগ্রহণে কৃতসংকল্প হইলেন। বিবাহের দিনও স্থির হইল।

 যে দিন সমারোহ-সহকারে নববধূ রাজব'টীতে প্রবেশ করিলেন, সেই সময়ে ঝঁশির সকল লোকই বলিতে লাগল, ইনি যেন মুর্তিমতী লক্ষ্মী অবতীর্ণ হইয়াছেন। সেই অবধি তিনি লক্ষ্মীবাই নামে প্রসিদ্ধ হইলেন। সামান্য বালিকা মনুবাই ঝুঁশির মহারাণী হইবে, ইহা কে জানিত!

“যন্মনােরথশতৈরগােচরং ন স্পৃশন্তি কবয়ােহপি যদিগরা।
স্বপ্নবৃত্তিরপি যত্র দুর্লভ লীলয়ৈব বিদধাতি তদ্বিধিঃ ।।”

রাণীর দত্তক-গ্রহণ ও রাজ্যচ্যুতি।

 বিবাহ অনুষ্ঠানের সময় মনুবাইর প্রগর্ভতার একটু পরিচয় পাওয়া যায়। বিবাহের সময় নব-পরিণীত বধূ ও বরের পরস্পরের বস্ত্রাঞ্চলে গ্রন্থি বন্ধন করিবার রীতি আছে। তদনুসারে পুরোহিত গ্রন্থি বাঁধিবার উদ্যোগ