এবং রাণীর যে সকল আত্মীয় কুটুম্ব আছে তাহাদিগের জন্য বৃত্তি নির্ধারণ করিয়া একটা তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এই পত্রের উত্তরে লর্ড ডেলহৌসী তাহার মন্তব্য লিখিয়া পাঠাইলেন; এবং ম্যালকম-সাহেবের অন্যান্য প্রস্তাব গ্রাহ্য করিয়া কেবল এক বিষয়ে অনভিমত প্রকাশ করিলেন। তিনি বলিলেন, রাজ্যের জহরৎ ও নিজস্ব সম্পত্তি দত্তক পুত্রের প্রাপ্য, দত্তকপুত্র যাবৎ বয়ঃপ্রাপ্ত না হয় তাবৎ তাহা গচ্ছিত থাকিবে। আইনানুসারে রাজার গৃহীত দত্তকপুত্র রাজাধিকারী না হইলেও, মহা- রাজের নিজস্ব সম্পত্তির সে যে অধিকারী তাহাতে সন্দেহ নাই। এই পত্র পাইয়া ম্যালকম-সাহেব, কেল্লার অভ্যন্তরস্থ রাজবাটী হইতে জহরৎ ও নগদ তহবিলের টাকা উঠাইয়া আনিয়া সহরের রাজবাটাতে গিয়া রাণী ঠাকুরাণীর জিম্মা করিয়া দিলেন এবং রাণীকে সহরের রাজবাটা ছাড়িয়া দিয়া, কেল্লার রাজবাটী ও সমস্ত কেল্লা, ইংরাজ-সরকারের তরফে অধিকার করিলেন।
এদিকে ব্রিটিশ-সরকারের ন্যায়নিষ্ঠার উপর রাণী-ঠাকুরাণীর অগাধ ‘বিশ্বাস থাকায়, তিনি এই সামান্য ৫০০০ টাকার বৃত্তি গ্রহণে অস্বীকৃত হইলেন এবং সমস্ত ঝাঁশি-রাজ্য যাহাতে পুনৰ্বার ফিরিয়া পান তজ্জন্য বিধিমতে উদ্যোগ করিতে লাগিলেন। তিনি উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় নামক একজন বাঙ্গালী ও আর একজন য়ুরোপীয়কে ৬০০০০ টাকা দিয়া এবং তৎসঙ্গে একটা দরখাস্ত দিয়া, বিলাতের কোর্ট অফ ডিরেক্টরের নিকট পাঠাইয়া দিলেন। এই দরখাস্তের মধ্যে, একস্থলে এইরূপ লেখা হয় যে, “ইংরাজ-সরকার আমাদিগকে ঝাঁশি-রাজ্য দান করেন নাই; পেশোয়ার রাজত্বকালে আমাদের পূর্বপুরুষেরা অনেক পরাক্রমের কার্য্য করায়, তাহাদের নিজ বাহাদুরী-বলেই উহা অর্জন করিয়াছিলেন—অত- এব উহাতে ইংরাজ-সরকারের কোন অধিকার নাই।” এই দরখাস্ত লইয়া, ঐ দুই মোক্তার বিলাতে গিয়া যে কি করিলেন, তাহার বার্তা