পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
ঝাঁশির রাণী।

যুদ্ধে রাণীর মৃত্যু।

২৩ মার্চ হইতে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১১ দিবস, ইংরাজেরা, ঝাঁশি ঘেরাও করিয়া, ঝাঁশিসৈন্যের সহিত দিবারাত্র ঘোরতর যুদ্ধ করিয়াছিল; তথাপি রাণীঠাকুরাণীর অপরিসীম সাহস ও দৃঢ়নিশ্চয়তা প্রযুক্ত তাহারা বিশেষ কিছু করিয়া উঠিতে পারে নাই। শুধু তাহা নহে, ইংরাজদিগের যুদ্ধসামগ্রী নিঃশেষিত হওয়ায় তাহারা অত্যন্ত দুৰ্বল হইয়া পড়িয়াছিল। ঠিক এই সময়ে দৈব তাহাদিগের অনুকূল হইলেন। তাত্যাটোপের সৈন্য, ইংরাজের সহিত যুদ্ধে পরাভূত হইয়া, সমস্ত যুদ্ধসামগ্রী রণক্ষেত্রে ফেলিয়া পলায়ন করায়, সেই সমস্ত যুদ্ধসামগ্রী অনায়াসে ইংরাজের হস্তগত হইল। এইক্ষণে সরূ-হিউ-রোজ, ঝাশি অবরোধ করিয়া নিশ্চিন্তভাবে বসিয়া না থাকিয়া, একেবারে হল্লা করিয়া কেলার মধ্যে প্রবেশ করিবার সঙ্কল্প করি এবং এই উদ্দেশ্য সিদ্ধ করিবার জন্য গুপ্তভাবে উদ্যোগ করিতে লাগিলেন। সমস্ত সৈন্যকে বিভক্ত করিয়া, এক এক কাজে নিযুক্ত করিলেন। প্রথম বিভাগের সৈন্য বপ্র-প্রাকারে সিঁড়ি লাগাইয়া কেল্লার মধ্যে প্রবেশ করিবে। দ্বিতীয় বিভাগ, তলবার ও সঙ্গীন লইয়া শত্রুর সহিত সম্মুখযুদ্ধ করিয়া সহরের কোন এক দ্বারের মধ্য দিয়া সহরে প্রবেশ করিবে, এইরূপ যুক্তি স্থির হইল এবং এই যুক্তি অনুসারে, প্রভাতকালে, সমস্ত ইংরাজসৈন্য কেল্লার অভিমুখে চাল আরম্ভ করিল। বরে মুখ্য দরজার দিকে ইংরাজসৈন্য আসিতেছে দেখিবামাত্র তত্রস্থ প্রহরীরা ভয়-সূচক শিঙ্গা ও রণবাদ্য বাজাইয়া ঝুঁশির সমস্ত সৈন্যকে এই বার্তা ইঙ্গিতের দ্বারা অবগত করাইল ও তখনই প্রস্তুত হইয়া স্বস্ব কর্তব্যে নিযুক্ত হইল।

 তাত্যাটোপের পরাভববার্তা শুনিয়া রাণীঠাকুরাণী একটু হতাশ হইয়া পড়িয়াছিলেন। প্রবল ইংরাজ-সৈন্যের সহিত আর পারিয়া উঠিবেন না,লেন।