পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

। । । | . . । | ৯ . . •• tr " L । ঝিলে জঙ্গলে শিকার ৯ই আগষ্ট ১৯১৭ খৃঃ। মেহের কল্যাণ, | বর্ষার সময়, বিশেষতঃ ভরা শ্রাবণে, এক একটা বাদলা দিন আসে, যেদিন আকাশ মেঘে ছাওয়া, অনবরত টিপ টিপ করে বৃষ্টি ঝরছে, কোথাও কোনও খানে আলাের দেখা পাওয়া যায় না। এমন দিনে সুস্থ সবল মানুষের জীবনও দুৰ্ব্বহ হয়ে ওঠে। আজ ঠিক তেমনি একটি দিন এসে দেখা দিয়েছে, চারিদিক ভিজে সাত স্যাত করছে—জাকাশে মেঘের ভার যে কখনাে হাল্কা হয়ে যাবে, এমন কোন সুদূর লক্ষণ কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আজ আমার মনে, কত দিনের কত পুরাণ সুখের কথা ভিড় করে আসছে। মানুষ কত কি ভুলে যায়, কিন্তু “পুরাণে সে দিনের কথা” ভোলা হয়ে ওঠে না। দু’বৎসর পয়ে,আমি বনের মধ্যে বড় বড় বাঘ, ভালুক, হরিণ শিকার কতে নিয়ে গিয়ে তােমায় মৃগয়া ব্রতে দীক্ষিত করব কথা আছে। আর এই অঙ্গীকার বার বার তুমি আমায় স্মরণ করিয়ে দাও। যখন আমার বয়স নাবালকের গণ্ডি পেরােয়নি, সবে সতের কি আঠার, সেই সময় আমি আমার প্রথম চিতা বাঘ শিকার করি। চিত বলে মনে কোনাে সেটি ছোট্ট-তা’য় রাক্ষস প্রমণ শরীর! রামায়ণে দুইভি রাক্ষসের হাড়ের বর্ণনা পড়েছ ত? এই বাঘের চামড়া না নিয়ে, হাড় যদি নেওয়া হত, তাহলে হয়ত তার পরিমাণ দুন্দুভির হাড়কে হার মানাত! এক রাস কটাশে স্লোয়া! জন্তুটি এত কাছে এলে পড়ছিল যে অতটা সান্নিধ্য কখনই নিরাপদ নয়। কিন্তু না জানা থাকলে, অনেক ভয়ানক জিনিষও ভয় দেখাতে পারে না। ভাগ্যে তাক ঠিক ছিল, এক গুলিতেই ফরসা। তারপর তার পিছন পিছন দৌড় দিলাম। আহত বন্য জন্তুকে এমন ভাবে তাড়া করে যাওয়া, শিকারের সব আইনের বিরুদ্ধ। বিশেষত এদেয় চাল চলন সবই যখন আমার অজানা। “সব ভাল যার শেষ ভাল,”--জয়ী আমিই হলাম। আজু এই বিশ্রী বর্ষার দিনে, ঘরে বসে বসে সেদিনের পাগলামির কথা নুতন করে মনে পড়ছে। সেদিনের সেই অপূৰ্ব আনন, আজকার সব প্রতিকূলতার মধ্যেও উজ্জ্বল মুর্তিতে এসে দেখা দিয়েছে—শুধু সে একা আসেনি, অনেক সাক্ষীও সঙ্গে এনেছে। নিজের শক্তি সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে, বড় বড় জানােয়ার যা কিছু শিকার করেছি, তা পায়ে হেঁটেই করেছি। এতে বিপদের পুষই সম্ভাবনা, শুধু আমি জোর করে বলতে পারি এই পন্থাই সব চেয়ে নিরাপদ। যদি এদের ধরণ ধারণ, মেজাজ ও খেয়াল সম্বন্ধে তোমার কোন ধারণা না থাকে, যদি এদের পিছু পিছু খুজতে খাবার, পায়ের দাগ দেখে খুঁজে বার করবার কায়দা কিছু না জান, কিচ্ছা কষ্ট স্বীকার করে এ বিদ্যা আয়ত্ত না করে খাক, তাহলে সুবিধার চেয়ে বিভ্রাট ঘটবারই ভাবা বেশী। তবে এ বিদ্যা বই পড়ে পাওয়া যায় না,

  • এমতী প্রিয়া দেবী কর্তৃক শ্রীযুক্ত কুমুদনাথ চৌধুরী প্রণীত “Sports in jheel & Jungle" নামক রাজী পার গুলোর বঙ্গানুবাদ