পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮২ ঝিলে জঙ্গলে শিকার। জায়গাটা তার খাস জমিদারী। সেখানে তার অবাধ অধিকার। খুশী হলে একদিনেই মাইপরে সবংশে নিধন করবার কোন বাধা ছিল না। তবু আমরা কখনও যথেচ্ছা হত্যাকাণ্ড ঘটাইনি। তিনি খুব নিপুণ শিকারী হয়েও পরদিনের জন্যে বুদ্ধিমানের মত কিছু সঞ্চয় রেখে আসতেন। সঙ্গে দু একটা হাতী থাকত। তাই অত্যধিক হাঁটবার পরিশ্রম লাঘব করে, তাজা হয়ে অনেক পাখী মারা কিছুই কঠিন হ’তনা, দূরে দূরে ভিন্ন ভিন্ন স্থানেও যাওয়া চলত। একদিনের কথা এখনও খুব মনে পড়ছে। যেন কালকার কথা। যে জমিতে আমরা শিকার করে গেছি ফিববার পথে সেখানে ঠিক আমাদের পায়ের কাছ হতে এক ঝাক উড়ে উঠে একটু দূর গিয়েই মাটিতে নেমে পড়ল। তাদের এমন শ্রান্ত দেখাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল বহু দূর পথের যাত্রী সংখ্যায় প্রায় দুশ। তাদের দেশে বিহার প্রদেরে একটা দৃশ্য আমার চোখের সম্মুখে জেগে উঠল। একজন কৃষক এক ঝাঁক পঙ্গপালকে বার বার তাড়াবার চেষ্টা করছিল। তাড়া খেয়ে উড়ে উঠে তার একটু দূর গিয়েই নেমে পড়ছিল। এতদূর হতে এমন শ্রান্ত হয়েই এসেছিল যে তাদের আর চলচ্ছক্তি ছিল না। সেদিন আমাদের শিকারের ভাগ্য ভাল ছিল, ইচ্ছা করলে অনায়াসে এদের মেয়ে একটা ঐতিহাসিক যশ অর্জন করা। কঠিন হত না, কিন্তু সুখের বিষয় সে ইচ্ছা আমাদের হয় নি। চিত্র বিচিত্র পাখাওয়ালা স্নাইপ দেখতে বড় সুন্দর, কিন্তু ত র জন্য ছররা বারুদ রং করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাদের পরিচয় লাভ অতি সহজ ব্যাপার। পােষাকের বাহারে আর মেনে চলার ভঙ্গীতে অনায়াসে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সংখ্যাও অল্প। অপ্রত্যাশিত জায়গায় যেখানে তুণ ও খর দন সেই খানে তাদের দেখা পাওয়া যায়। এই জাতীয় দম্পতিদের পতিরদল যথাকালের কিছু পরে এসে কেন দেয়। দল তাদের ভারী নয়, দেখতে এত ছােট যে এিশ চরিশ গজ দূরে যেখানে উড়ে ওঠ সেখানে মারা আর ছাড়া দুই এক কথা। যাদের পুচ্ছ দেখতে তালপাতার হাতপাখার মত তারা আগে আসে, আর য য় দেরীতে। আর যাদের ছুচের মত সরু লেঙ্গ, তারা খুব শীৰ উড় পলায়। তাদের ডানা করপে যেন বিজুলি খেলে যায়। ভাদ্র আশ্বিনের তপ্ত দিনে শিকার করা সহজ, যদি না বৃষ্টি-বােয় রােদের তীব্রতা তােমার মস্তিস্কর পক্ষে অসহ হয়ে ওঠে। সে সময়কার সাত সতে জল ব.তাস যমের দক্ষিণ দু র একেবারে খোলা থাকে, এই তো প্রবাদ। এ সময়, বিশেষ জোয়ান না হলে, যম বাজার শাসন এড়ান দায়। কেননা তিনি তখন তাঁর দণ্ড উদ্যত করেই রাখেন। তার অবয়ব দৃঢ় আর শ্বাসযন্ত্র সবল হলেও হয় না। উত্তরাধিকার স্বত্বে অক্ষু স্বাস্থ্য ও যদি পেয়ে থাক তবু শারীরিক নিয়মের সামান্য ব্যতিক্রম করাও চলে না। বাছা কল্যাণ, তুমি ব্রাহ্মণসন্তান, বাল্যাবধি স্বাস্থ্য রক্ষার সমস্ত সহজ বিধি নিয়ম যদি মেনে চল, তাহলে তোমার তিতিক্ষা শীতাতপ হত সর্বদাই তোমাকে রক্ষা করবে। সূর্যের কিরণ সমুদ্রে ঝাপিয়ে পড়া প্রথমটা সহজ নয়, কিন্তু এ রৌদ্র স্নানে কারাে কোন ক্ষতি হয় না, যদিনা দুৰ্ব্বদ্ধিবশতঃ অসংযত হয়ে স্বাস্থ্য হানি করে থাক। আমার মনে হয় স্নাইপ মারবার জন্যে rabore বন্দুকই যথেষ্ট। যদিও 16-bote বন্দুক হতে বিষ্ময়কর ব্যাপার ঘটতে দেখেছি। তবে সে ভেল্কি বাজী মানুষের হাতের গুণে, যন্ত্রের বাহাদুরীতে নয়। বন্দুক যা গড়েন শুনেছিi6-bore বন্দুকের গঠন প্রণালীতে এমন নৈপুণ্য নিয়ােগ করে থাকেন যে কাছাকাছি তার গুলি ৪০ গজের মধ্যে খুব জোয়ের সঙ্গে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে ফল নির্ঘাত ফল। মেঘলা কি ঝেড়ে দিনে ৪•• গজের চেয়ে দুরে পাখী উড়ে উঠলে কিছু ' ।