পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝিলে জঙ্গলে শিকার - • ?

  • ১।

ইভে ৰন্দকে বলমে শিখতে হয়। তা যদি শিখতে পার, তার এ পথে চলবার জন্যে কুজন যােগ্য সঙ্গী আর উপদেশ দেবার লােক পাও, তাহলে দেখবে, মৃগয়া মাের, ব্যসন না ফে.অানন্দের উপকরুণ হবে। শিকারের খেয়াল বজায় রাখতে গিয়ে দুঃখে পড়বে না। এ বিষয়’তােমায় অনেক কনকোশল শিখিয়ে দিতে পারব। চারিদিকের সব অবস্থার উপর তীক্ষ্ণ ও সতর্ক দৃষ্টি দেবার স্বাভাবিক ক্ষমতা থাকলে, চর্চার ফলে সহজে সে শক্তি ষে আরো বাড়ে তাতে আর সনেহ কি ? আজকালকায় দিনে ছেলেদের যেভাবে শিক্ষা দেওয়া হয়, তাতে তাদের অনেক বিধিদত্ত শক্তির উৎকর্ষ সাধিত হওয়া। দূরে থাকুক বরং অবনতি হয়। এই কথা মনে করেই, আমি সৰ্ব্বদা তােমার মনে যে সব জীব, জ, পাখী দেখতে পাও, তাদের সম্বন্ধে কৌতুহল জাগিয়ে রাখবার জঙ্গে বিশেষ চেষ্টা করে আসছি। তুমি আয় ছােট্ট অলকা (যদিও তুমি মনে কর এ ক্ষেত্রে মেয়েদের কোন অধিকারই নাই) অনেকবার হাতীর উপর চড়ে স্নাইপ (Snipe) শিকার দেখেছ। যখনই ডিঙিখানা বিলের পদ্ম আর শরবনের উপর দিয়ে নিঃশব্দে সরে চলেছে, পাখীটি উড়েছে, আমি মারতে যাচ্ছি, অমনি ছেলে বয়সের অদম্য উৎসাহে, চীৎকার করে, হাততালি দিয়ে, সেটিকে উড়িয়ে দিয়েছ। তবু তােমরা এখন জান, মাইপ (কাদাখোঁচা) কত অল্প সময়ের জন্যে বাঙ্গলা দেশে বেড়াতে আসে। তাদের লম্বা ঠোটের পাশে, চোখের চেয়ে কাণ যেখানটিতে থাকে,সেই সংস্থানের বিশেষ সার্থকতা আছে। কথাটা ভাল বরে বুঝিয়ে দেবার পর থেকে, আমার কথা ঠিক কি না, বার বার তার পরখ করে নিয়েছ। আমি যতদুর জানি বুনাে মায়ােগ কাদাখোঁচা ছাড়া আর একমাত্র পাখী, যার এই বিশেষত্ব আছে। এ তত্ত্ব তােমাদের এখনও জানতে বাকী আছে। কিন্তু কৃষ্ণপক্ষের চেয়ে চাদনী রাত এদের বেশী পছন্দ। তাই বােধ হয় শগগিরই এসে পোঁছুবে তোমরা সহজেই তাদের চিনতে পারবে। তাদের মধ্যে যার ছুচের মত লেজ আর যার পাখার মত লজ, সে প্রভেদ কঙ্গে তাদের বিষে বেগ পেতে হবে না ! তোমাদের বাঁচা বয়সের ঝকঝকে উল চোখে, এ প্রভেদ ই র পড়বে। একটি প্রবীণ চিব র কিন্তু টি অাবিষ্কার করতে পারেন নি। স্বামী স্ত্রীকে এক চেহারা দিয়েছেন, কিন্তু তাও কি কখনো হয়? আর এক কথা। এই পার বর কণ'র মনে এমন ভাব যে একেবারে মাণিকজোড়! পুরষ ধরা পড়লে মেয়েটিও ধৰা দেয় ! কাজেই আমি যখন শিকারে যাব, তখন তোমরা দুই ভাই বোনে দুটি পেতে পারবে। এদের সংখ্যা বেশী নয়; আর আমার বংশবৃদ্ধির অনুপাতে, তাদের নম্বর ঠিক রেখে গ্রেপ্তার করে আনবার সাধ্য আমার হচ্ছে না। তাই এবারে প্রথম যেটি ধরা পড়বে, সেটি আমাদের বাড়ীর ছােট লাটসাহেব ওরফে কালী বাবুকে নজর দিতে হবে। তা না হলে তিনি নিশ্চয়ই মানহানির দাবীতে মহারাণীর দরবারে নালিশ রুজু করবেন। তখন আমার অবস্থা কি যে হবে, তা তােমর বেশ আন্দাজ করতে পারছ। " স্নাইপ আর স্নাইপ শিকারের কথা এখন বেশী বলব না। আমাদের হরিপুরের পৈতৃক বাড়ীর অঙ্গনা হতে অনেক সন্ধ্যায় তােমর চিতাবাঘের করাত চালার মত আওয়াজ শুনেদু—আর যতদিন আমার গুলি লেলে সে মরেছে, ততদিন তার সে শব্দের বিরাম হয় নি। তােমরা হয়ত দেখেছ, আমি যখন শিকার করতে যাই, তখন আমার বসবার টুলের সম্মুখে পাতায় ভন্ন ডালপালা দিয়ে একটা আড়াল করে নি। সে আড়ালটা যথেষ্ট ঘন কি মজবুত নয় ; তবু নিজেকে লুকিয়ে রাখার পক্ষে যথেষ্ট। তােমরা মােহনলাল হাতীতে বাঘের যাওয়া আসার গলিপথ আবিষ্কর করে ফিরিবার আগেই