পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮৮ ঝিলে জঙ্গলে শিকার শিকারীরা বয়ে আনছিল তখন তার গন্ধে সে ভারি চঞ্চল হয়ে উঠেছিল। তার চেয়ে আশ্চর্যের কথা শােন। একবার গুটিকত মরা বাঘের চামড়া বারন্দার একধারে শুখতে দেওয়া হয়েছিল। বাগানে এটি কত হরিণ চরছিল। সেখান হতে চামড়া তারা দেখতে পায়নি। শুধু গন্ধের প্রভাবে ভয়ে তারা কেঁপে কেঁপে চীৎকার করে উঠতে লাগল। অলকমণি, তোমার পােষা হরিণশিশুরা কেন অমন করছে জাবার জন্যে তােমার ভারি কৌতুহল হয়েছিল। কল্যান আমার কাছে জেনে নিয়ে সবজান্তা ভাবে সকলের কাছে খবরটা দিয়ে বেড়াতে লাগল। এ হরিণগুলি এত ছােট বেলায় বন ছেড়ে এসেছিল যে তখন তাদের দুগ্ধপােয্য অবস্থা। বাঘের চামড়ার ব্যাপার যখন ঘটে তখন সবে ঘাস খেতে শিখছে। শুকর-শিকার। । ” | Polo হচ্ছে খেলার রাজা, আর বাহ-শিকার সেরা শিকার। এর ও রাজ-পদবী। তাছাড়া এই দুই হচ্ছে রাজাদের খেলা আর শিকার। বয়স যখন তরুণ ছিল, তখন এই খেলা খেলবার মত ভরা থলি ছিল না, আর যখন বয়স পুরাণ হয়ে এল তখন যৌবনােচিত খেয়াল ছাড়তে হ’ল। Tent club (বু-সমিতি) এখন অতীত ইতিহাস। রাসায়নিক নীলের আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে এর অন্যান্য নানা কারণে নীলকর জাতি অন্তর্ধান হয়েছে। ভদ্র ইংরাজ অভিজাত বর্গের স্থান জবরদস্তি দখল করেছে জর্মান, য়িহুদী আরও বহুতর বিদেশী। অবস্থা তাদের ভিন্ন, মনোভাব অন্য বর্ণের, আর আদর্শ স্বতন্ত্র। সেকালের মত যে দুচার জন দিলদরিয় ইংরাজ ভদ্রলােক এখনও বর্তমান, তারাও মৃগয়া প্রীতি ও ক্রীড়া কৌতুক বর্জিত ; স্বজাতীয় ভাই বন্ধুর সঙ্গে এমন মিলে মিশে হারিয়ে গেছেন যে তাদের পুনরুদ্ধার করে শিকারীর দলে টেনে দল-পুষ্ট করবার চেষ্টা “প্রাংশুলভ্যে ফলে লােভাৎ উদ্বাহৰিব বামনের মতই হাস্যকর। বলি-ভালুক মারা পুরুষােচিত ব্যবসায় আর তাদের নেই, তাস পাশীর মােহ মৃগয়ার আনন্দকে গ্রাস করে বসে আছে। দেশের প্রজার সঙ্গে যে প্রীতির বন্ধন আগে ছিল তা শিথিল হয়ে খসে পড়েছে। এখন গ্রামের নিরক্ষর চৌকীদারই হচ্ছে স্বাস্থ্য, কৃষি, বাণিজ্য ও রাজনৈতিক জ্ঞান অর্জনের প্রধান উপায়—তাদের শিক্ষা-ভাগীরথীর গােমুখীর উৎস! ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব কলম পিশে দিন কাটান, অবান্তর ও অমূল বিবরণী লিখে ও সরকারে পেশ করে কালক্ষেপ করেন। তার চেয়ে যদি “ঘােড়া পর জিন” এঁটে বরাহ অবতারের ছিন্নণী বর্ষফলকে গেঁথে, নুতনতম আগ্নেয়াস্ত্রের সখ্যবহার করে, বন্ত ও গ্রাম্য পথ পরিদর্শন ও পরিভ্রমণে হাতে বন্দুকে দেশের অবস্থা সম্বন্ধে জ্ঞান রাশি সঞ্চয় করতেন, তাহলে আর কিছু না হক পথ ঘাট গুলাের সংস্কার হত—প্ৰজায় চলাচলের সুবিধা ঘটত। আধুনিক সরকারী ডাক্তারগণ প্রায়শঃই পড়া পুথির সাহায্যে বন্দুক ও বর্ষা আঘাতের সম্বন্ধে অভিমত ব্যক্ত করেন, অথচ এ দুই অস্ত্রের সঙ্গে এদের সাক্ষাৎ পরিচয় থাকে কিনা সনেহনিয়মের ব্যতিক্রমই কিনা তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। তাই দু একজন * ভিন্ন গােএের নিশ্চয়ই আছেন তাদের প্রাপ্য সম্মান তাদের সম্মুখে নিবেদন করে দিয়ে, আমার 'মত ব্যক্ত করছি, সে কথা জানিয়ে রাখাই ভাল। আইরিশ জাতীয় কোন কমিশনার, তার শাসনাধীন প্রদেশে ও তার আহ্বাধীন কাজের মধ্যে, অশ্বারােহণে অপটু আর বন্দুক চালনায় অনভিজ্ঞ কোন কর্মচারীকে প্রবেশাধিকার দিতেন না। বলা ৰাহুল্য আমি এঁর সঙ্গে অভিন্ন হৃদয় ও সম্পূর্ণ একমত!