পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝিলে জঙ্গলে শিকার। ১৫ গুলােকে ভয় খাওয়া যায় না; কিন্তু ঘায়েল করে যদি চলচ্ছক্তি রহিত কর্তে পারা যায় তাহলে কাজ কতকটা হয় বটে। এরা কিন্তু মানুষের কোন হানি করে না। এই শয়তানদের কথা শেষ করবার আগে একজন স্কচ (Scotch) শিকারী তাদের যে বর্ণনা করেছেন সেটা সৰ্বসাধারণ্যে জ্ঞাত করান কর্তব্য। তিনি বলেন জন্তুদের মধ্যে এদের মত “খে কী, বেয়াদব, ঘূণ্য জানােয়ার আর দুটী নেই”— ( The most snarling, ill-mannered and detestable of beasts)। এমন সকল শব্দের উপযােগিতা নিশ্চয়ই আছে। অপব্যবহার হয় নাই। এমি একটী জঘন্য ‘শষ’ (d-d) নিশ্চয়ই আদিম মানবপ্রবর “আদমের” মুখ হতে রাগের মাথায় প্রথম জন্ম লাভ করেছিল। আর এ রাগটার উৎপত্তি যে ইভা ( Eve)’র ব্যবহারে হয়নি, একথা কে সাহস করে বতে পারে ? আইন যাদের পেশা তারা বলবেন এমি আর একটী বহু প্রাচীন কথা তাহাদের ব্যবসায়ে প্রচলিত আছে—সেটা হচ্ছে alibi। এটাও নিশ্চয়ই আদিম পাপের মতই পুরাতন। “আদম” জিহােবর বিচারকালে এই alibi ~গরহাজিরের অছিলা করেছিলেন, কিন্তু বিফলে। আমাদের জজ সাহেবেরাও যদি একথাটা জানতেন তাহলে তাদের হাতে কি জবর নজিরই থাকত। একবার একটা চিত হঠাৎ কোন দিক দিয়ে কোথায় যে অন্তর্ধান হ’ল তা আর কারাে বোধগম্য হলােনা বলে (এর কথা পরে আরাে শুতে পাবে। আমরা সবাই—শিকারী, লাঠীয়াল, বরকন্দাজ তার অনুসন্ধানে বা’র হ’লাম। জায়গাটীর পাশে এক টুকরা জঙ্গল ছিল। সেটা কারাে নজরে পড়েনি। কেন না সেখানে গাছপালা কি ঘন ঘাস এমন কিছু ছিল না যার আড়ালে আবডালে কোন জন্তু এমন কি একটা বেড়ালও লুকিয়ে থাকা সম্ভব ! আমরা একবার নয়, দু’বার নয়, তিন তিন বার এর চারিদিক উটক-পাটক করে দেখে যখন কোনই কিনারা করতে পারলাম না তখন এর পাশে যে আখের ক্ষেত ছিল সেই দিকে খুজতে যাব মনস্থ করলাম। লাঠীয়ালেরা সবে মাত্র দুপা এগিয়েছে, কার কি কৰ্তব্য সে বিষয় আমার তাদের সব কথা বলা তখনও শেষ হয়নি, এমন সময় আমি দেখতে পেলাম সেই জঙ্গলটার মধ্যে কি যেন নড়িতেছে। তারপর দেখি কি না, চিতাটা বুকে হেঁটে মস্ত একটা টিকটিকির মত এগিয়ে চলেছে। ভাগ্য আমার বন্দুকটা আমার কাবের উপর তৈরি ছিল। আচমকা শব্দ শুনে সবাই চমকে উঠল, আর মনে করলে, এটা কেমন করে ফসকে আওয়াজ হয়েছে। কিন্তু যখন বাঘটাকে ভূমিসাৎ হয়ে মরতে দেখলে তখন আর তাদের বিস্ময়ের পারাপার রইল না। আমরা যখন তার খোঁজে চারিদিক তােলপাড় করে বেড়াচ্ছিলাম তখন কেমন করে নিঃশব্দে লুকিয়েছিল। আর অতবার আনাগােনা করা সত্ত্বেও আমাদের চোখে পড়েনি! এটা ভারি আশ্চর্য মনে হয়। | বাঘশিকারের একটা বিশেষ স্মরণীয় দিনের কথা তােমাদের এখানে বলা ভাল। তার মধ্যে একট মজার কথা আছে। এই সবে গেল বৎসর ঘটনাটা ঘটেছিল। গল্পটা আমার আর K. G, B’র কাছে তােমরা অনেকবার শুনেছ। একটী বাঘিনী আমার নির্ঘাত গুলির ঘায়ে মরে পড়েছে। আমরা সবাই মিলে চারিদিক ঘিরে তার ভােরা-কাটা সুন্দর চামড়া খানির আর নধর দেহের প্রশংসাবাদ করছি। একজন লাঠীয়াল কাছাকাছি আর বেশীর ভাগ পাহাড়ের মাথার উপর রয়েছে। আমাদের কাছে পৌছিতে হলে তাদের অনেকখানি পথ নেমে আসূতে হবে। বাঘিনী-নিধন বার্তা, লাঠীয়ালের। চীৎকার করে তাদের বলছে। তারা মহাননে পাহাড় হতে দৌড়ে নেমে আছে। কাছাকাছি যারা