পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৪ বিলে জঙ্গলে শিকার । ' শুধু কপাল জোরে হাতযশ লাভ করেছিলাম। একটা হরিণ প্রায় ৫০ গজ দূরে পাহাড় হতে নীচের দিকে ছুটে চলেছিল। গুলি করবার কোন মতলব আমার ছিল না। শিকারীটা আমাকে কখনাে গুলি করতে দেখে নি। বড় জন্তু শিকারে নিয়ে যাবার আগে আমার তাকটা একবার পরখ করে দেখবে বলে বােপ হয় আমাকে ডেকে হরিণের খবর দিলে। তখন সে আববা গজ পনের দূরে গিয়ে পড়েছে। আমার ‘450 কৰ্ডাইট বন্দুকের গুলিতে সে হােট কটি খরগােসের মত টুপ করে পড়ে গেল। গুলির ঘায়ে তার গালটা ধারাল ক্ষুরে কেটে যাবার মত সােজা কেটে গিয়েছিল। | খোলা ঘন জঙ্গলে “পারা” কিম্বা Hog Deer দেখতে পাওয়া যায়। শূয়ােরের মত মাথা নীচু করে চলার অভ্যাস হতে এদের নাম Hog Deer হয়েছে। শর আর লম্বা কাসে, ভবনের সংকীর্ণ পথে যেতে হলে মাথা নীচু করে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। বর যে সব জায়গা আগুনে পুড়ে • ফাকা হয়ে যায় সেখানে তারা চরে। তারা কচি কচি ঘাস খেতে ভালবাসে। এমি চটপটে যে শিকারীর হাতীর ঠিক শুড়ের নীচে হতে ছুটে পালাতে পারে। দুচারটে ভাল মাথা যোগাড় করবার ইচ্ছে থাকলে শিকারের সময় গুলি খুব সিধে চালান চাই। | মধ্যভারতে এক জাতীয় ছােট সুকুমার হরিণ দেখতে পাওয়া যায় তাদের নাম Mouse Deer। বন পিটবার সময় তারা হঠাৎ বেরিয়ে আসে। কাছাকাছি ৮নং গুলিতেই মারা পড়ে। উচুতে সবে ১ ফুট। এ হরিণ না মারাই ভাল। চিনকার কিম্বা Gazelle পাহাড়ী নালা কিম্বা উপত্যকায় বাস করে। তারা বাঙ্গালা দেশের অধিবাসী নয়। মধ্য প্রদেশে এদের বহুল বসতি। ছােট রাইফেলের গুলিতেই মারা পড়ে। তবে এদের শিকার করবার সব চেয়ে সদুপায় হচ্ছে রেঙ্গিতে চড়ে যাওয়া। রেঙ্গি হচ্ছে ত্রিকোণ ক্ষুদ্ৰ শকট। আরােহী এবং চালক পিঠোপিঠি হয়ে বসতে হয়। বসবার জায়গায় অনেকটা বিচালি বিছিয়ে তার উপর কম্বল ঢাকা দিয়ে নিলেই চলে। এই রেঙ্গি এক গাছে চড়া ছাড়া সব করে অর সর্বত্র যায় ; এমন কি সত:র দিতেও পারে। | চৌশিঙ্গা অথবা চতুশৃঙ্গ হরিণের দুজোড়া করে শিং আছে। তাই তাদের এই নাম। সম্মুখের শিং জোড়া পিছনের জোড়ার চেয়ে অনেকটা ছােট। এ জাতের হরিণ মধ্য প্রদেশের নাগপুর অঞ্চলে অনেক পাওয়া যায়। ঘন বনসমাচ্ছন্ন পৰ্বতে আর গুল্ম বনে এদের বসতি। এর। ভারি লাজুক স্বভাবের। সহজে বনের বার হয় না, নয়ত বা এমন সময়ে আর এমন জায়গায় দেখা দেয় যেখানে তুমি তাকে দেখবার কোন প্রত্যাশাই কর নি। তখন আর তাকে শিকার করা চলে না। বন্দুকের গুলিটা তার চেয়ে আরাে ভাল কারাে জন্যে তুলে রাখতে হয়। নীলগাই হরিণকে কেন যে আমাদের দেশের লােকেরা গরু মনে করে তা বলতে পারি নে। বরং এদের আকৃতিতে ঘােড়র সঙ্গে সাদৃশ্য বেশী। এ জাতের হরিণের পুরুষদের গলার কাছে যে লম্বা দাড়ার মত চুল আছে, তা দেখলে মনে হয় ঘােড়ার কঁপের চুল ; কেউ যেন ভুল করে লাগিয়ে দিয়েছে। বুদ্ধিটা গরুর মতই স্থূল, তার চেয়ে বেশী নয়। কিছু দূর দৌড়ে পালায়, তার পরে ফিরে দেখে ব্যাপারটা কি। শরীরটা বেশ বড় তাই বেশী দূরে না থাকলে লক্ষ্য ভ্রষ্ট হবার আশঙ্কা থাকে না। খােলা মাঠে বাস করতে ভাল বাসে। এই হরিণের ইস্পাতের রংয়ের চামড়া হতে বেশ সুন্দর হাত ব্যাগ তৈরি হতে পারে। এদের সংখ্যা আজও অনেক। যে সব বন বিশেষভাবে রক্ষিত সেখানেও এদের শিকার করা সম্বন্ধে কোন বারণ নাই। হরিণ জাতীয় জন্তুদের মধ্যে সব চেয়ে সুন্দর হচ্ছে কৃষ্ণসার (Black Buck)। শুনেছি বেলার