পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৬ বিলে জঙ্গলে শিকার। আমি—এর মধ্যেই ভারতীয় রাজনৈতিক অবস্থার সমস্ত ব্যাখ্যা সুস্পষ্ট হয়ে আছে। এতক্ষণ ধরে তঁা’র শ্রবণবিবরে যত কিছু হেঁয়ালি প্রবেশ করে জটিল অনির্দিষ্ট আকারে ক্রমশঃ আরও কুটিল হয়ে উঠছিল, হঠাং আমার এই একমাত্র কথায় সরল সুপথ রে বেরিয়ে এসে সব পরিষ্কার হয়ে গেল। M, . মহাশয়ের রাজনৈতিক শিক্ষার এমন সত্ত্বর সমাপ্তি দেখে বন্ধুগণ আমার হঠকারিতার জন্যে সরস মাতৃভাষায় আমাকে অনেকগুলি ভাল ভাল কথা শুনিয়ে দিলেন। শ্ৰীমতী M. P. আমাকে সাদা কালোয় মিলামেশা ও লাভাব সম্বন্ধে প্রশ্ন করায় আমিও নিৰ্দোৰ সরল ভাবে উত্তর করলাম ;—এর ফলে মিশ্র বিচিত্র বর্ণের ও সঙ্কর জাতীয় জীবের উৎপত্তি হয় । প্রকৃতির বর্ণ ভাঙা র শ্বেত কৃঞ্চ এই দুই বিশেষ প্রান্তি লাভ করেছে। পুরুষজন্তুর বর্ণ ও বেশ ভূষা কেন যে অধিকর উজ্জ্বল ও দৃষ্টি আকক হয় ইহার অর্গ খুব সম্ভবতঃ এই যে * প্রকৃতির ইচ্ছা নয় এদের সংখ্যা অধিক বৃদ্ধি কভি করে। ওয় দেখতে পাওয়া যায় স্ত্রীজন্তুর গায়ের বর্ণ তাদের আবাসভূমির চারি দিকের সঙ্গে বেশ সামঞ্জস্য রক্ষা করছে। এতে করে তারা সহজে অপরের চোখে পড়ে না;-শিকারী এবং শত্রুর আক্রমণ হতে আত্মরক্ষার সুবি। হয় । বৃদ্ধা হরিণীরা সাধারণতঃ প্রহরীর কাজ করে। হরিণগুল যে সময় লড়াই কি খেলা নিয়ে ব্যস্ত তখনই তাদের একজন শত্রুর আগমনের প্রথম সংব'দ জানায়। আমার একটা হরিণের মাথা আছে তার একটা শিং ঠিক মাঝখানে ভাঙ্গ। এটা তার বিজয় চহ, বদি ও অক্ষত শরীরে নয়। এই লাজুক ভীরু জন্তুগুলির নিকটবত্তা হই হ’ কিরূপ উপায় অবলম্বন করা আবশ্যক তা সহজেই বােধগম্য। সুতরাং “অনুমতি বিস্তরে!” | আমি একবার একটা হরিণ গুলি করার পর সমস্ত হরিণের পালাফাতে লাফাতে দেড় আমার সম্মুখে এণে পড়ল । গুলি করার বা সার কান হরণ তাদের মতো নেই দেখে যখন তারা আমার খুব কাছে এসে পড়। তখন আমি উঠে দাড়াগ,। আমার দু দিকে ডাইনে ও বায়ে বিভক্ত হয়ে যখন তারা দু ফুট ব্যবধানে দেড়ে চলে এল তখন দৃশ্যটা বড় চমৎকার হয়েছিল। গুলির শব্দে চমকে উঠে দলের প্রাপ্তবয়স্কা হরিণীগুলি সােজা অনেক দূর পর্যন্ত লাফ দিয়ে উঠেছিল। উদ্দেশ্য যে উচু মাটীর আলের আড়ালে আর কোথাও কোন শত্রু অলক্ষিতে আছে কি না তাই দেখা। কেন না এই আঙুলের সুবিধা নিয়েই আমি তাদের অত কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। আমার শেষ কথাগুলি তােমাদের সতর্ক করবার জন্য বলছি। এ উপদেশ কখনও ভুল না। খােলা মাঠে গুলি চালান বড় বিপজ্জনক। তাই এ কাজ করবার আগে একবার তোমার field-glass দিয়ে চারি দিকটা বেশ ভাল করে দেখে নিও। এই সৎপরামর্শের অবহেলা বশত অনেকবার অনেক জায়গায় অনেকের বিপদ ঘটেছে। আমার মনে হয় নিজেকে এমন দুরবস্থার মব্যে ফেলার চেয়ে শিকারের সমস্ত সুযােগ ত্যাগ করাও ভাল। বিপদ দিব। নাও ঘটে, হয়ত এমন কিছু ঘটতে পারে যার জন্য চিরকাল ধরে অনুশোচনা ও অনুতাপ করতে হয়। -