পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝিলে জঙ্গলে শিকার। | ১৫ই জানুয়ারী, ১৯১৮। মেহেব অলকা কল্যাণ, আরণ্য বিদ্যায় দক্ষ অভিজ্ঞ লোকের সাহায্য ও শিক্ষা ব্যতীত হাতে কলমে বনের মধ্যে জন্তুকে সন্ধান করে আবিষ্কার করবার বিদ্যা কোন রকমে লাভ হতেই পারে না। মানুষকে উড়তে শেখান যেমন অসম্ভব এও তার চেয়ে কিছু কম নয়। সৌখিন ভাবে কঠোর বিদ্যা লাভ হয় । প্রথমত, যে জন্তু শিকার করতে যাবে তার অভ্যাস, স্বভাব, গতিবিধির সম্বন্ধে তােমার বিশেষ অভিজ্ঞতা থাকা আবশ্যক। শুধু তাই নয়। বনের ও পৰ্ব্বতের অন্যান্য পশুদের, এমন কি পাখীদের, সম্বন্ধেও এ জ্ঞান একান্ত প্রয়োজনীয়। শুধু যে বাণ আর চিতাবাঘ নিশাচর তা নয়। যাদের শিকার করে এরা জীবন ধারণ করে সে সব জন্তুও নিশাচর। ভাল বাইসনও এই প্রকৃতির জীব। এই সব ভাষা হি’ল জন্তুদের পায়ে হেঁটে নির্বিঘ্নে শিকার করতে হলে এদের সম্বন্ধে যে পরিমাণ জনি নিতান্ত আবশ্যক তা অর্জন করবার মত উৎহ, উদ্যম ও তৎপরতা খুব কম লোকেরই দেখা যায়। যা কিছু একান্ত আবশ্যক অপরে করে। যেমন জন্তুর অন্বেষণ, সন্ধান, শিকারীর সংস্থান, অাহত জুন্তুর নির্বিচার অসুর- নিকাশ নেই যার পরিণামে বিপদ ঘটে। কাজেই হাতী গিঠে ন ত নাচানে চড়ে ছাড়া পায়ে হেটে শিকার, বিতে: হিংস্র জন্তু শিকারের ব্যাপারটা, নিতান্ত নিৰ্ব্বোধlt aীরের কাজ বলে গণ্য হয়েছে। | সদাসৰ্ব্বদা সত ক বুদ্ধিমান সাহসী “গাইডের” সঙ্গে বনের এ যাওয়া হাসা করতে করতে আরণ্য জন্তুদের রীতি চরিত্র সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা লাভ হলেও অ•ার প:শি এ সব সময়ে বন্দুক ছাড়া হয়ে যাওয়া কখনই উচিত নয়। তবুও ধনে প ত জ্ঞানার্জন চেষ্টায় যখন ফিরবে তখন গুলি করবার প্রলোভনটা সম্বরণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। বােপঝাপ বেতবন প্রান্তরের ঘন বন শ্ৰেণী এই জ্ঞানার্জনের পথে বিশেষ অন্তরায়। ব্যবান বশতঃ অতি অল্প দূরেও কিছু দেখা যায় না। যখন এ বয়ে যথেষ্ট জ্ঞ ন াভ হয়েছে তখনও বনের সংকীর্ণ পথে যাওয়া আসা করতে হলে বিশেষ সাবধান ও সতর্ক হয়ে চলা উচিত। কেন না এই সব জায়গাতেই ভীষণ হিংস্র জন্তু লুকিয়ে বসে থাকে। আমার পুরান ‘গাইড”রা এমন সব জায়গায় যেতে হলে প্রথমে চিৎকার ধ্বনি করে পরে কিছুক্ষণ প্রতীক্ষা করে দেখে কোন সাড়া পাওয়া গেল কি না। তার পরে এগোয়। এই শব্দটুকু জটীকে অগ্রসর কিম্বা পশ্চাৎপদ করবার পক্ষে যথেষ্ট। এই উপারে তােমার শ্বাপদ জন্তু হতে ভল্লুক, হরিণ, শূকর ও নকুল প্রভৃতি ক্ষুদ্র প্রাণীর গতির পার্থক্য বুঝবার সুযােগ ঘটে। রাত্রি যখন সমাগত, কুলায় প্রত্যাগত পাখীদের করব নিস্তব্ধ, এই সময়ের অব্যবহিত পূর্ব হতেই বাঘ, চিত। কিম্বা হরিণ নিশা ভ্রমণে নির্গত হবার জন্য উৎসুক হয়ে ওঠে। সন্ধ্যার পূর্বেই তাদের দিবা নিদ্রা ভঙ্গ হয়ে যায়। এই সময়ে কিম্বা উষা কালে হরিণ ও শূকর রাত্রি ভ্রমণ সমাধা করে যখন আপন আপন দিনের আশ্রয়ে ফিরে আসছে সেই সময়ে বাব আর চিন্তা তাদের শিকারের, সুযােগ খোঁজে। ঘন ঝোপের মধ্যে অনেক জন্তুর বারম্বার গতিবিধির ফলে সেখানে সংকীর্ণ পথের সৃষ্টি হয়। যে পথে বা অল্প স্বভাবতই বনচর পর সেই পথ ধরে চলে। আবার পর্বতসংলগ্ন, বনে জন্তুরা সব চেয়ে নিরাপদ নিম্নগামী পথের পথিক হইতে, প্রায়ই দেখা যায়। শৈল নিঝরিণী যে প্রান্তরে নেমে আসে এরাও সেই পথের অনুসরণ করে। সদাসর্বদা গতিবিধির ফলে সংকীর্ণ