কি বর্ষাকাল, সকল সময়েই তাঁহার পায়ে বিলাতী বার্ণিস করা চক্চকে জুতা ও পরিষ্কার সাদা মােজা দেখা যাইত। তাঁহার গায়ে যে কামিজটা ও কোঁচান চাদর খানি থাকিত, তাহা কেহ কখন একটুমাত্র অপরিষ্কার দেখে নাই। সােণার বােতামগুলি ও চেন ছড়াটি সকল সময়েই ঝক্ঝক্ করিত। কেদারের মস্তকের চুলগুলি সতত দুইভাগে বিভক্ত থাকিত, ও তাহা হইতে সুগন্ধি গোলাপের গন্ধ ভুর্ ভুর্ করিয়া সর্ব্বদা বাহির হইত।
গত তিন বৎসর হইতে আমার হৃদয়ে যে সর্ব্বনাশের বীজ রােপিত হইয়াছিল, তাহা ক্রমে অঙ্কুরিত হইয়া পরিবর্দ্ধিত হইতে লাগিল। কেদারের সহিত অল্পে অল্পে আমার যে প্রকার বন্ধুতা ও ভালবাসা স্থাপিত হইয়াছিল, এখন ক্রমে ক্রমে তাহা আরও গাঢ়তর হইতে লাগিল। কেদার আমার সহিত যেরূপ ভাবভঙ্গী দেখাইতে লাগিলেন, আমার উপর সতত যেরূপ দয়া প্রকাশ করিতে লাগিলেন, সর্ব্বদা যেরূপ আমার উপকারের চেষ্টায় মন ও প্রাণ অর্পণ করিতে লাগিলেন, তাহাতে আমি মুহূর্ত্তের জন্যও বুঝিতে পারিলাম না যে, কেদার হইতে আমার কোনও রূপ অনিষ্ট সংঘটিত হইবে, অথবা তাঁহার দ্বারা আমার সর্ব্বনাশের দ্বার উদ্ঘাটিত হইবে।
ক্রমে ক্রমে কেদার আমার একজন পরম বন্ধু হইয়া উঠিলেন। অবিরত উভয়ে একত্রে থাকিতে ইচ্ছা হইল। এমন কি কেদার যদি এক দিবস স্কুলে না আসিতেন, দিবস যদি তাঁহাকে দেখিতে না পাইতাম, তাহা হইলে সেই