পাতা:ডিটেক্‌টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
ডিটেক্‌টিভ পুলিস, ১ম কাণ্ড।

চাদরে আবৃত রহিয়াছে। উহার উপর বড় বড় বালিস সারি সারি সাজান রহিয়াছে, এবং একপার্শ্বে কয়েকটা রূপার বাঁধা হুঁকা পিত্তল-নির্ম্মিত মনুষ্য-প্রতিকৃতির হস্তে বৈঠকের উপর শোভা পাইতেছে। কেদার বাবু সেইস্থানে ঐ সতরঞ্চের উপর একটা বালিসে বামকনুই ভর দিয়া অর্দ্ধশয়িতাবস্থায় বসিলেন; আমিও তাঁহার নিকট নিশ্চিন্তভাবে বসিয়া রহিলাম। “রামদাস পান নিয়ে এস” বলিয়া একবার ডাকিয়া স্ত্রীলোকটী আমাদের উভয়েরই গা ঘেঁসিয়া বসিল।

 ঐ স্ত্রীলোকটীর নাম গোলাপ। গোলাপের রূপ বর্ণন করিবার আমার ইচ্ছা নাই, কারণ পাঠক মহাশয়গণ যে মুখে শত শত প্রাতঃস্মরণীয় রমণীর রূপ-বর্ণন পড়িয়াছেন—সহস্র সহস্র পতিপ্রাণা সাধ্বী স্ত্রীলোকের রূপের মাধুরী কীর্ত্তন করিয়াছেন, সেই মুখে চিৎপুর রাস্তার একটী বার-বনিতার রূপবর্ণন পড়াইয়া তাঁহার রসনাকে কলুষিত করিতে ইচ্ছা করি না। তবে এইমাত্র বলিতে পারি যে, কেদার ইহার রূপের অতিশয় পক্ষপাতী ছিল। পরে আমিও সকলের নিকট বলিয়াছি, গোলাপের মত সুন্দরী স্ত্রীলোেক কলিকাতায় আর দেখিতে পাওযা যায় না। তখন আমি আমার চক্ষে তাহাকে যদিও অতিশয় সুন্দরী দেখিতাম সত্য; কিন্তু আমার বন্ধুগণ মধ্যে মধ্যে আমাকে বলিতেন,—“গোলাপকে সুন্দরী বলা যায় না, সে সুন্দরী নহে। তাহার বর্ণ ব্যতীত অন্য অঙ্গসৌষ্ঠব কিছুমাত্র নাই। যৌবনের প্রারম্ভে সাধারণতঃ স্ত্রীলোক মাত্রই যেরূপ দেখায়, এও তাই।” এ সকল কথা আমার ভাল লাগিত না, আমি তাহাদিগের উপর অসন্তুষ্ট হইতাম। যাহা হউক,