কর্ম্মচারী হঠাৎ আমাদিগের বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিল। আমার বাড়ীর ভিতর তাহাদিগের হঠাৎ-প্রবেশের কারণ জিজ্ঞাসা করিবার অভিপ্রায়ে আমি যেমন উহাদিগের সম্মুখীন হইলাম, অমনি উহারা আমাকে ধৃত করিয়া উত্তমরূপে বন্ধন করিল এবং সেইস্থান হইতে আমাকে স্থানান্তরে লইয়া গেল। আমি যে কেন ধৃত হইলাম, তখন তাহার কিছুই বুঝিতে পারিলাম না; কিন্তু পরদিবস দেখিলাম, আমি মাজিষ্ট্রেট সাহেবের সম্মুখে নীত হইলাম।
মাজিষ্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হইয়া দেখিলাম, জমীদার মহাশয়ের অন্নে প্রতিপালিত হইয়া সামান্য অর্থের লোভে তাঁহার অমূল্য জীবনরত্ন হরণ করিয়া আমার নিজেরই ভবিষ্যৎ আশায় পাংশু প্রক্ষেপ করিয়াছিলাম, সেই বঙ্গদেশীয় জমীদার মহাশয়ের কয়েকজন কর্ম্মচারী, কয়েকজন উকীল, প্রভৃতি অনেকে সেইস্থানে উপস্থিত। তাঁহাদিগকে দেখিয়াই প্রথমে আমার হৃদয় হঠাৎ চমকিয়া উঠিল; কারণ, সেই সময় আমি বুঝিতে পারিলাম যে, আমার উপর জালের অভিযোগ আনীত হইয়াছে, জাল করা অপরাধে আমি বন্দী হইয়াছি।
অকস্মাৎ এই বিপদ্পাতে আমি কিছুই কর্ত্তব্য অবধারণা করিতে পারিলাম না। যাহা হউক, মাজিষ্ট্রেট সাহেবের এজ্লাসে এই মোকদ্দমার সম্বন্ধে অনেক সাক্ষীর এজাহার গৃহীত হইল, ও পরিশেষে বিচারের নিমিত্ত আমি দায়রায় সোপরদ্দ হইলাম। সেইস্থানে জুরির বিচারে ছয় বৎসরের নিমিত্ত আমার কারাদণ্ড হইয়াছে।