পাতা:তরুণের আহ্বান - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অরবিন্দের বাণী

 যে স্বাধীনতার অখণ্ড রূপ বিবেকানন্দের মধ্যে আমরা দেখিতে পাই তাহা বিবেকানন্দের যুগে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে প্রবেশ করে নাই। অরবিন্দের মুখে আমরা সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতার বাণী শুনিতে পাই। অরবিন্দ যখন বন্দেমাতরম্ পত্রিকায় লিখিলেন “We want complete autonomy, free from British control”—তখন স্বাধীনতাকামী তরুণ বাঙালী বুঝিল যে এতদিন পরে সে মনের মতো মানুষ পাইয়াছে। ভাবপ্রবণ বাঙালী স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন দেখিয়া বিভোর হইল। এখনো কানে বাজে সেই বাণী যাহা অরবিন্দ কলিকাতার মুক্ত প্রাঙ্গণে দাঁড়াইয়া একদিন বলিয়াছিলেন—

 “I should like to see some of you becoming great; great, not for you own sake, but to make India great—so that she may stand up with head erect among the free nations of the world.”

 পরিপূর্ণ স্বাধীনতার প্রেরণা পাইয়া বাঙালী জাতি ঝড়তুফান অগ্রাহ্য করিয়া, বিপ্লবের ঝঞ্ঝার ভিতর দিয়া ছুটিয়া আসিয়াছে।

মহাত্মাজীর নূতন বাণী

১৯২১ খ্রীস্টাব্দে আমরা যখন আসিয়া পৌঁছিলাম তখন অসহযোগের বাণীর সঙ্গে সঙ্গে আমরা আর-একটা কথা শুনিলাম মহাত্মা গান্ধীর মুখে—“জনসাধারণকে বাদ দিলে এবং তাহাদের মধ্যে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা না জাগাইতে পারিলে, স্বরাজ লাভ হইতে পারে না।” অসহযোগের পন্থা ভারতে বা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। সেদিনও যশোহর জেলাবাসী এই পন্থা অবলম্বন করিয়া নীলকরের অত্যাচার হইতে আত্মরক্ষা করিয়াছিল। কিন্তু যে “গণবাণী” মহাত্মা গান্ধীর মুখে শোনা যায় তাহা ভারতের রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে নূতন কথা।

দেশবন্ধুর আদর্শ

এই বাণী আরো পরিস্ফুট হইয়াছিল দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের জীবনে। তিনি তাঁহার লাহোরের বক্তৃতায় অতি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন যে যে-স্বরাজ তিনি লাভ করিতে চান— তাহা মুষ্টিমেয় লোকের জন্য নহে—তাহা সকলের জন্য,

১০২