পাতা:তরুণের আহ্বান - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তোলার আদর্শে উদ্বুদ্ধ, পূর্ণ তৎপর ও দায়িত্বশীল নরনারী এই আন্দোলনে যোগ দিয়াছে। এই আন্দোলন দুই প্রকার কর্মসূচী গ্রহণ করিয়াছে। কিংবা দুই প্রকার কর্মসূচী গ্রহণ করা ইহার কর্তব্য। প্রথমত, ছাত্রদের বর্তমান সমস্যার সমাধান করিতে হইবে ও তাহাদের দৈহিক, মানসিক ও নৈতিক পুনরুজ্জীবন ঘটাইতে হইবে। দ্বিতীয়ত, ছাত্ররাই ভবিষ্যৎ নাগরিক— এই কথা মনে রাখিয়া, যাহাতে তাহারা জীবন-সংগ্রামের যোগ্য হয় সেইরূপে তাহাদের গড়িয়া তুলিতে হইবে। জীবন রণাঙ্গনে প্রবেশ করিলে তাহারা যেসকল সমস্যার সম্মুখীন হইবে, যে-সকল কর্মে তাহাদের লিপ্ত হইতে হইবে, তাহার পূর্বাস্বাদ তাহাদের দিতে হইবে।

বিশেষ প্রয়োজন

ছাত্র-আন্দোলনের প্রথম যে দিকটির কথা আমি বলিয়াছি ক্ষমতাসীনরা সাধারণত তাহা বিরূপভাবে গ্রহণ করিবেন না বলিয়া মনে হয়। কিন্তু আন্দোলনের অপর যে দিকটির কথা আমি বলিয়াছি তাহা নিরুৎসাহিত ও নিন্দিত করা হইবে, কখনো কখনো তাহা পণ্ড করিয়াও দেওয়া হইবে। প্রথমে কী করা আপনাদের কর্তব্য সে সম্পর্কে বিশদ কর্মসূচী দিবার চেষ্টা করা আমার পক্ষে বাঞ্ছনীয় নয়, তাহার প্রয়োজনও নাই। তাহা নির্ভর করিবে অংশত আপনাদের বিশেষ প্রয়োজন ও চাহিদার উপর, অংশত শিক্ষা-বিষয়ক কর্তৃপক্ষ ঐ-সব প্রয়োজন ও চাহিদা মিটাইবার কী ব্যবস্থা করেন তাহার উপর।

 প্রত্যেক ছাত্রকেই সুঠাম স্বাস্থ্যোজ্জল দেহ, উন্নত চরিত্র, প্রয়োজনীয় তথ্য জ্ঞান ও সুস্থ গতিশীল ভাবধারায় পূর্ণ মস্তিষ্কের অধিকারী হইতে হইবে। কর্তৃপক্ষ যে ব্যবস্থা করিবেন তাহাতে যদি ছাত্রদের দৈহিক, চারিত্রিক ও মানসিক বিকাশ যথাযথভাবে না হয় তবে সেই বিকাশ সম্ভব করিয়া তোলার উপযুক্ত ব্যবস্থা আপনাদেরই করিতে হইবে। কর্তৃপক্ষ যদি আপনাদের সেই প্রয়াসকে স্বাগত জানান উত্তম; যদি স্বাগত না জানান তবে তাঁহাদের অপেক্ষায় না থাকিয়া আপনারা আগাইয়া যান। আপনাদের জীবন আপনাদেরই, উহার বিকাশ সাধনের দায়িত্বও আপনাদের। অপর কাহারো অপেক্ষা এ বিষয়ে আপনাদেরই উদ্যোগী হইতে হইবে।

 এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলি। উহার প্রতি আমি আপনাদের দৃষ্টি

১১৩