পাতা:তরুণের আহ্বান - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

না, যে সমাজে প্রত্যেক ব্যক্তি শিক্ষা ও উন্নতির সমান সুযোগ পাইবে, যে সমাজে প্রমের এবং কর্মের পূর্ণ মর্যাদা থাকিবে এবং অলসের ও নিষ্কর্মার কোনো স্থান থাকিবে না, যে রাষ্ট্র বিজাতীয় প্রভাব ও প্রতিপত্তির হস্ত হইতে সর্ব-বিষয়ে মুক্ত হইবে, যে রাষ্ট্র আমাদের স্বদেশী সমাজের যন্ত্রস্বরূপ হইয়া কাজ করিবে, সর্বোপরি যে সমাজ ও রাষ্ট্র ভারতবাসীর অভাব মোচন করিয়া বা ভারতবাসীর আদর্শ সার্থক করিয়া ক্ষান্ত হইবে না পরন্তু বিশ্বমানবের নিকট আদর্শ সমাজ, আদর্শ রাষ্ট্র বলিয়া প্রতিভাত হইবে— আমি সেই সমাজ ও সেই রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়া থাকি। এই দ্বপ্ন আমার নিকট একটা অখণ্ড সত্য, এই সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য সব-কিছু করা যায়, সর্বপ্রকার ত্যাগ বরণ করা যায়, সর্বপ্রকারের কষ্ট স্বীকার করা যায় এবং এই স্বপ্ন সার্থক করিবার চেষ্টায় প্রাণবিসর্জন করিলেও “সে মরণ স্বরগ-সমান।” হে তরুণ ভ্রাতৃমণ্ডলী! তোমাদের দিবার মতো সম্পদ আমার কিছু নাই—আছে শুধু এই প্রশ্ন— যাহা আমাকে অসীম শক্তি ও অপার আনন্দ দিয়াছে যাহা আমার ক্ষুদ্র জীবনকেও সার্থক করিয়াছে। এই স্বপ্ন আমি তোমাদের ঊপহার স্বরূপ দিতেছি— গ্রহণ করো।

 আজকাল রাজনীতি ক্ষেত্রে আমরা অনেক প্রকার গালাগালি ও অনেক মজার সমালোচনা শুনিতে পাই—তার মধ্যে একটা অভিযোগ এই যে, আমরা নাকি “যুব-সমিতি”গুলি Capture বা দখল করিবার চেষ্টা করিতেছি। এ অভিযোগ শুনিয়া হাসি পায়। যাহারা কোনো প্রতিষ্ঠান বা আন্দোলনের সহায়তা করিয়া আসিতেছে তাহাদের বিরুদ্ধে Capture-এর অভিযোগ হাস্যাস্পদ বটে; আমি জিজ্ঞাসা করি, যুব সমিতির ও ছাত্র আন্দোলনের এই নবাগত বন্ধুরা এতদিন কোথায় ছিলেন? যাহারা গোড়া থেকে এই আন্দোলনের সৃষ্টির ও ক্রমোন্নতির সহায়তা করিয়া আসিতেছে তাহারা আজ Capture অপরাধে অপরাধী এবং যাঁহারা প্রারম্ভ হইতে আজ পর্যন্ত কিছুই করেন নাই এবং এখন Capture করিবার জন্য বদ্ধপরিকর হইয়াছেন—তাঁহারা হইলেন নিঃস্বার্থ হিতৈষী। গত কলিকাতা-কংগ্রেসের পর বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্র সমিতির সাধারণ সভার আমি এই বৎসরের জন্য আমাদের কর্মপদ্ধতি নির্দেশ করি। সেই বিস্তৃত কর্মপদ্ধতির মধ্যে একটি বিষয়ের উল্লেখ ছিল- “To assist students movement, youth movement and Physical Culture movement” অর্থাৎ ছাত্র আন্দোলন, যুব-

১৩৪