পাতা:তরুণের আহ্বান - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাসীরা স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভরশীল হইতে না পারেন তাহা হইলে সে পল্লীসংস্কারের কোনো সাধকতা হইবে না। আমাদের মনে রাখিতে হইবে যে সাধারণ গ্রামবাসীর মধ্যে পরমুখাপেক্ষিতার ভাবই প্রবল সুতরাং স্বাবলম্বনের। ভাব জাগাইতে হইলে বহুদিন ধরিয়া অক্লান্ত পরিশ্রম করিতে হইবে।

 আজকাল বন্যা ও ভি নিত্য বানায় পরিণত হইয়াছে। বন্যা ও দুর্ভিক্ষের সময়ে অনেক সমিতি সাধ্যমতো এই সকল অভাব মোচনের চেষ্টা করেন এবং ধনিক সম্প্রদায়ও অনেক ভাবে সাহায্য করিয়া থাকেন। এ সকল সৎপ্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করা উচিত কিন্তু সঙ্গে সশে বন্যা ও দ-ভিক্ষের মত কারণ কি, সে বিষয়ে গবেষণা আরম্ভ করা প্রয়োজন। গবেষণা আরম্ভ করিসে একদিনেই যে আমরা একটা মীমাংসায় উপনীত হইব সে আশা আমি রাখি না॥ কিন্তু তথাপি অবিলম্বে এ বিষয়ে গবেষণা শুরু করা দরকার। আমি সকল চিতাশীল যুবককে এবং অমিদের বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে মনোনিবেশ করিতে অনুরোধ করি।

 আমাদের সমাজের মধ্যে যে-সব অত্যাচার ও অনাচার ধম ও লোকাচারের নামে চলিতেছে সে বিষয়েও যুবকদের একটা কতব্য আছে। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় মহাশয় অনেক সময় বলেন যে, আমাদের যুবকেরা বিবাহের সময়ে হঠাৎ বাপ-মার বাধা হইয়া পড়ে। আমার নিজের মনে হয় যে শুধ, বিবাহ কেন— আমরা অনেক সময়ে সুবিধামত বাপ-মার বাধ্য হইয়া পড়ি। যুবকেরা যে বাপ মা বা গরজনের নামে মধ্যে মধ্যে অনায় কাজ করিয়া থাকেন— এ কথা অস্বীকার করিলে সত্যের অপলাপ করা হইবে। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের যুবকেরা যদি সংঘবদ্ধ হইয়া সামাজিক অত্যাচার ও দেশের অনাচার নিবারণের জনা বদ্ধপরিকর হন, তাহা হইলে অনতিবিলম্বে আমাদের সমাজে যুগান্তর উপস্থিত হইবে।

 আমার ভাই ও ভগিনী সকল! অঙ্গিকার মতো আমার বক্তব্য শেষ করিতে চাই। মনে রাখবেন যে আমাদিগকে সমবেত চেষ্টায় ভারতবর্ষে নতন জাতি সৃষ্টি করিতে হইবে। পাশ্চাত্য সভ্যতা আমাদের সমাজে ওতপ্রোতভাবে প্রবেশ করিয়া আমাদিগকে ধনে প্রাণে মারিতে চেষ্টা করিতেছে। আমাদের ব্যবসায় বাণিজ্য, ধা-কম ও শিল্পকলা মরিতে বসিয়াছে। তাই জীবনের সকল ক্ষেত্রে আবার মৃতসঞ্জীবনী সুধা ঢালিতে হইবে। এ সধা কৈ আহরণ করা আনিবে, জীবন না দিলে জীবন পাওয়া যায় না। আদশের নিকট যে ব্যক্তি

৩৬