পাতা:তরুণের আহ্বান - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

 সকল সমস্যার মল ধন-সমধি করতে হবে। শসের রপ্তানী বন্ধ করে দেশে অন্নের সংস্থান ব্যখতে হবে। পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে। অবশ্য এ-বিষয়েও সেই উত্তর টাকায় অভাব। প্রকৃতপক্ষে গভর্নমেন্ট ট্রেজারি আমাদের হাতে না এলে, কিছুই হবে না। গনমেন্ট আমাদের ওপর কি রকম ধারণা পোষণ করেন, তা দিনাজপুরে গতবার ভিক্ষের সময় প্রকাশ পেয়েছে। ভীষণ ভিক্ষের ফলে মানুষ শুতে পরিণত হয়েছিল— মা সন্তানকে বিক্রয় করেছে, স্বামী শ্রীকে পর্যন্ত বিক্রয় করতে বাধ্য হয়েছে। শোচনীয় পদশাতেও গভর্নমেন্ট এ-বিষয়ে পট্টিপাত করলেন না। শুধু তাই নয়, স্ত্রী ও সন্তানবিয়ের অনা কারণ নির্দেশ করে ব্যাপারটি অতিরঞ্জিত ঘটনা বলে এক ইস্তাহার জারী করলেন। এ সময় সাহায্য করা দুরে থাক, এই ব্যাপারে জাতিকে অপমান করতেও তারা কুচিত হন নি। স্বাধীন দেশ হলে এই ইস্তাহার দেওক্ষার পর গভর্নমেন্ট একদিনও থাকত কি না সন্দেহ।

 যারা বেশ ভালোভাবে, ঐশ্বর্যের মধ্যে সথে থাকেন, তারা দুঃখ-দারিদ্র্য বুঝতে পারেন না। শাসক যদি প্রজার বেদনা অনুভব না করে তবে এরকম ইত্যাহার হবেই। যদি তারা দক্ষি -পীড়িত অঞ্চলে বাস না করে তবে সেখানকার দুঃখ ব্যথা বুঝবে কি করে? তাই আমাদের সমস্ত Political Problem। ইংরেজ বলেন সামাজিক সংস্কার না হলে Political Problem ঘুচবে না। কিন্তু মুখে তা বললেও, কার্যত তারা কোনো সংস্কারই পছন্দ করেন না, তারা বেশ জানেন যে প্রাণ’ যে জাতির একবার জেগে উঠেছে, সে জাতি সর্বতোভাবে জেগে উঠবে। তারা কোনো অঙ্গের মধ্যেই জীবনের পশন দেখতে চান না। তারা জানেন, তাহলে এ শাসন এ শোষণ আর চলবে না। এই কারণেই বিশেষ দরকার 'সেবা'। কিন্তু এ-বিষয়ে অনেকদর লক্ষ্য রেখে, আমাদের গভীরভাবে চিন্তা কতে হবে। আমাদের এখন বড়ো সমস্যা হচ্ছে পরাধীনতা জাতিকে এর নাগপাশ থেকে মুক্ত করা। ক্ষমতা আমাদের কিছুই নেই। ক্ষমতা নিজেদের হাতে এলে বলতে পারি আমাদের ইচ্ছা অনুসারে আমরা জাতি গড়ে তুলব। গত দশ বৎসয়ে আমাদের এশিয়ার কত সপ্ত জাতিই জেগেছে, তার কারণ ক্ষমতা এসেছে তাদের হাতে।

 এদেশে আজ প্রাণের শরণ দেখা দিচ্ছে। জাতির জীবনীশক্তি আঞ্জ আত্মপ্রকাশ করতে চেষ্টা করছে। সাহিত্য, দর্শন, কাব্য, রসায়ন, খেলাধুলা, ব্যায়াম— সব বিষয়েই নতন সষ্টি দেখা দিচ্ছে, এই হচ্ছে জাতির জীবনের

৬২