থাকা সত্ত্বেও আমার মত অযোগ্য ব্যক্তিকে এত বেশী ভোট দিয়া নির্ব্বাচিত করিয়াছিলেন। যে দিন রাত্রি প্রায় দশটার সময়ে মান্দালয় জেলের নিভৃত কক্ষে বসিয়া আমরা কয়েকজন রাজবন্দী সাফল্যের সংবাদ পাই—সে সময়ে প্রকাশ্যভাবে আপনাদের নিকট কৃতজ্ঞতা জানাইবার উপায় আমার ছিল না। কিন্তু আমি ভরসা করি যে, গিরি নদী এবং অরণ্যানীর ব্যবধান অতিক্রম করিয়া আমার হৃদয়ের বাণী আপনাদের নিকট পৌঁছিয়াছিল।
আমার বিশেষ কৃতজ্ঞতার কারণ এই যে, যে অবস্থায় পড়িলে সাধারণতঃ বন্ধুকে তাহার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও চিনিতে পারে না, ঠিক সেই অবস্থায়—রাজপুরুষগণ কর্ত্তৃক যখন আমি লাঞ্ছিত—আপনারা আমলাতন্ত্রের ভ্রূকুটিতে বিচলিত না হইয়া আমাকে সম্মানের উচ্চ বেদীতে বসাইয়াছেন। আমার উপর ঈদৃশ প্রীতি ও বিশ্বাস দেখাইয়া আপনারা যে শুধু আমাকে ধন্য করিয়াছেন তাহা নয়—আপনারা সকল রাজবন্দীকে গৌরবমণ্ডিত করিয়াছেন।
কারাবাসী থাকিতে আপনাদিগকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাইবার ও দেশের বর্ত্তমান সমস্যা বিষয়ে আপনাদের মতামত জিজ্ঞাসা করিবার সুযোগ পাই নাই। মনে করিয়াছিলাম, যখন মুক্তি পাইব তখন এই দুইটী কর্ত্তব্য সম্পাদন করিতে পারিব। মুক্তি লাভের আশা পূর্ব্বে মোটেই ছিল না, কিন্তু হঠাৎ যে দিন অপ্রত্যাশিতভাবে মুক্ত হইলাম সেই দিন আমি ভগ্নস্বাস্থ্য ও শয্যাগত। আপনাদের প্রতিনিধি হিসাবে আমার যাহা কর্ত্তব্য আমার মুক্তির পর আমি আজ পর্য্যন্ত তাহা করিতে পারি নাই। অনিচ্ছাসত্বেও আপনাদের সহিত পরিচয় স্থাপন না করিয়াই আরোগ্য লাভের আশায় আমাকে এখানে চলিয়া আসিতে