তর্জ্জমা—father land আমরা অবশ্য mother land কথাটি চালাইয়া থাকি কিন্তু ইংরাজী ভাষার দিক হইতে তাহা শুদ্ধ নয়।
বাঙ্গলার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকদের লেখার মধ্যে মাতৃভাবের অভিব্যক্তি দেখিতে পাওয়া যায়।
বঙ্কিমচন্দ্র লিখিয়াছেন—
"সুজলাং সুফলাং মলয়জ শীতলাং
শস্য শ্যামলাং মাতরম্।”
দ্বিজেন্দ্রলাল যখন গাহিয়াছিলেন—
"যে দিন সুনীল জলধি হইতে উঠিল জননী ভারতবর্ষ"
এবং রবীন্দ্রনাথ যখন গাহিয়াছিলেন—
"ও আমার জন্মভূমি তোমার পায়ে ঠেকাই মাথা
তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।”
তখন তাঁহারা তন্ত্রোপদিষ্ট মাতৃরূপের প্রভাবই দেখাইয়াছিলেন। দেশবন্ধু মাতৃরূপের অনুরাগী ছিলেন। পারিবারিক জীবনে তাঁহার মাতৃভক্তির কথা অনেকেই জানেন। আলিপুর জেলে তিনি বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা আমাদিগকে প্রায়ই পড়িয়া শুনাইতেন। বঙ্কিম-লিখিত মায়ের তিনটি রূপের বর্ণনা তাঁহার অত্যন্ত প্রিয় ছিল। সে বর্ণনা পড়িতে পড়িতে তিনি ভাবে বিভোর হইয়া যাইতেন। তখন তাঁহাকে দেখিলেই বুঝা যাইত তাঁহার মাতৃভক্তি কত গভীর। তাঁহার “নারায়ণ” পত্রিকায় বৈষ্ণব-ধর্ম্ম সম্বন্ধে যেরূপ আলোচনা হইত, শাক্ত-ধর্ম্মেরও সেইরূপ অনুশীলন হইত। দুর্গাপূজা সম্বন্ধে যে কয়টী প্রবন্ধ “নারায়ণে” প্রকাশিত হইয়াছিল, সেগুলি উচ্চভাবে পরিপূর্ণ।