পাতা:তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গোড়ার কথা
১৯

দেশের সীমানা ছাড়িয়ে দেশান্তরে ভ্রমণ করতে হবে এবং অজানা অপরিচিত দেশ আবিষ্কার করতে হবে। যে জাতি এরূপ করতে পারে তার শারীরিক বল, সাহস, চরিত্রবল, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায় এবং সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্য-বিস্তার ও সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠা হয়ে থাকে। ব্রিটিশ জাতি যে আজ এত উন্নত এবং তারা যে এত বড় সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে পেরেছে, তাদের প্রবল ভ্রমণেচ্ছা তার অন্যতম কারণ। সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা আমরা পোষণ না করলেও দেশ-বিদেশে ঘুরলে আমাদের হৃদয়টা যে বড় হবে, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা যে বেড়ে যাবে, আত্মবিশ্বাস যে বলবান্‌ হবে, বুদ্ধিবৃত্তি যে বিকাশ লাভ করবে—এ বিষয়ে কি কোনও সন্দেহ আছে? তবে ভূপর্য্যটন থেকে ষোল আনা লাভ গ্রহণ করতে হলে প্রভূত ধনশালী আধুনিক আমেরিকান ভূপর্য্যটকদের মত না বেড়িয়ে যতদূর সম্ভব কষ্ট স্বীকার করে পায়ে হেঁটে, ঘোড়ায় চেপে, সাইকেলে চড়ে বেড়াতে হবে।

 আর একটা বড় আশাপ্রদ লক্ষণ এই যে, আজকাল প্রায় সব জেলায় যুবকদের মধ্যে একটা আন্দোলন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এই চাঞ্চল্যই জীবনী-শক্তির স্পন্দন। তরুণদের প্রাণ জেগেছে, তারা এখন নিজেদের কর্ত্তব্য বুঝতে আরম্ভ করেছে—তাই এত জায়গায় যুবক-সমিতির অধিবেশন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। মধ্যে মধ্যে শুনতে পাওয়া যায় যে তরুণরা কাজ করতে প্রস্তুত হয়েছে কিন্তু তারা পথ ঠিক বুঝতে পারছে না। কেউ কেউ বলেন যে, নেতার অভাবে যুবকেরা কিছু করে উঠতে পারছে না। নেতা খুঁজে না পেলেও এবং পথ ঠিক বুঝতে না পারলেও তরুণরা যে জেগেছে এবং স্বীয় কর্ত্তব্য ও স্বীয় দায়িত্ব বুঝবার চেষ্টা করছে, এটা কম কথা নয়। এখন আমার বক্তব্য এই—নেতা যদি খুঁজে নাও পাও—তবে কি তোমরা চুপ করে বসে থাকবে? তোমরাই