পাতা:তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পত্র
৬৯

তবে আমাদের হৃদয়ের কথা দেশবাসী এক দিন না একদিন বুঝিবেই বুঝিবে। দেশের নামে এত বড় একটা প্রহসনের অভিনয় দেখিব—বিংশ শতাব্দীর বাঙ্গলা দেশে যে 'Nero is fiddling while Rome is burning' কথার একটা নূতন দৃষ্টান্ত চোখের সামনে ভাসিয়া উঠিবে—কোনও দিন ভাবি নাই।

অনেক কথা বলিয়া ফেলিলাম—হৃদয়ের আবেগ চাপিয়া রাখিতে পারিলাম না। আপনাদের নিতান্ত আপনার বলিয়া মনে করি তাই এত কথা বলিতে সাহস করিলাম। আপনার গঠনমূলক কাজে ব্যাপৃত—আশা করি, আপনারা এই দলাদলির পঙ্কিল আবর্ত্তে আকৃষ্ট হইবেন না।

বিদ্যালয়ের কথা পড়িয়া বিশেষ আনন্দিত হইলাম। বাড়ীর কথা শুনিয়া অবশ্য দুঃখিত না হইয়া পারিলাম না। তবে এ-কথা আমি পূর্ব্ব হইতে জানি এবং চণ্ডীবাবু প্রভৃতি বন্ধুদিগকে কয়েকবৎসর পূর্ব্বেই বাড়ীটির পরিণামের কথা বলিয়াছিলাম। আমার সর্ব্বদা মনে হইত যে স্কুলের কর্ত্তৃপক্ষরা unbusiness like ভাবে জমির “লিজ” লইয়া বাড়ী নির্ম্মাণ আরম্ভ করিয়াছিলেন এবং তার ফলে পরিণামে জমিদারেরই লাভ হইবে। যাক, এখন ত “গতস্য শোচনা নাস্তি"। আপনারা যে কিছুমাত্র নির্ভরসা না হইয়া 'গৃহনির্ম্মাণ-ভাণ্ডার' সংগ্রহ করিতে বদ্ধপরিকর হইয়াছেন, ইহা খুব আশাপ্রদ। আপনাদের চেষ্টা যে সফল হইবে সে বিষয়ে আমার সন্দেহ নাই, কারণ—

"নহি কল্যাণকৃৎ কশ্চিৎ দুর্গতিং তাত! গচ্ছতি।”

সমিতির সকল সংবাদ পাইয়া বিশেষ সুখী হইলাম। আপনারা যদি মেথর মুচি প্রভৃতি তথাকথিত নিম্নশ্রেশীর বালকদের জন্য একটি বিদ্যালয় করিতে পারেন তবে বড় ভাল হয়। এ বিষয়ে অমৃতের সহিত