পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
তিতাস একটি নদীর নাম

স্থানের অকুলান দেখিয়া, আরো জঙ্গল কাটিয়া, খানায় মাটি ফেলিয়া তারা কেন আরো দুই চারিটা মালীবাড়ির গোড়াপত্তন করিল না? ইহাতে বাধা জন্মাইল কিসে? এসকল সহজপন্থার বিরাট সম্ভাবনা কেন এক মালিনীর বুকের কানাচে শুখাইয়া মিলাইয়া গেল। এমন করিয়া কেন বাড়ি খালি হইয়া পড়ে। একদা যারা বাস করে, পরে তারা কোথায় চলিয়া যায়। কেন আবার নতুন মানুষ আসে না। মালিনী অনেকবার বাঁশের মাচাতে লাউকুমড়ের গাছ লতাইয়া দিয়াছে। তাতে ধরিয়াছে অজস্র লাউকুমড়া। সে নিজে কেন একটা শক্ত মাচাকে আশ্রয় করিয়া ফলবতী হইয়া উঠিতে পারিল না। তবেত এ বাড়ির চেহারা আগের মতই অম্লান থাকিয়া যাইত। নূতন যুগের সম্ভাবনা লইয়া নূতন মানুষ এর আঙ্গিনায় খেলিয়া বেড়াইত। নূতন শিল্পীরা যুগের চাহিদা পূরণ করিয়া, নূতন চাহিদা জাগাইয়া নূতন রকমের শিল্পরচনা করিয়া যাইত। কেউটে সাপ এ-বাড়ির ত্রিসীমায় ঘেঁসিত না।


 শরীয়তুল্লা বাহারুল্লা দুই ভাই শহরে গিয়াছিল। ফিরিতে রাত হইয়া গিয়াছে। গ্রামের অন্ধকার পথগুলি একসঙ্গে অতিক্রম করিয়া বাড়ির কোণে আসিয়া ছাড়াছাড়ি হইল। পাশাপাশি দুই বাড়ি। মাঝখানে বেড়া। তারা যার যার পরিবার নিয়া আলাদা থাকে। ছোটভাই শরীয়তুল্লা ঘরে না ঢোকা পর্যন্ত বাহারুল্লা দাঁড়াইয়া রহিল, তারপর ঘুরিয়া