নাচিলে বানাইয়া দিব হস্তের পাচনি। একবার নাচ দুইবার নাচ তিনবার নাচ দেখি, নাচিলে গড়াইয়া দিব হস্তের মোহন বাঁশি।’
দক্ষিণা দিয়া বিদায় করিতে করিতে কালোবরণ পুরোহিতকে বলিল, ‘দেখেন ত কর্তা, মুখে-পস্সাদের ভাল দিন নি আছে। দুই কাম এক আয়োজনেই সারা করতে চাই, কি কন।’
পঞ্জিকা দেখিয়া পুরোহিত বলিয়া দিল, পরশুই একটা ভাল দিন অন্নপ্রাশনের।
ছোটবউর ছেলে বাড়িয়া উঠিতেছে। বসিয়া নিজের চেষ্টাতে মাথা ঠিক রাখিতে পারে। কিন্তু ইদানীং অত্যন্ত পেটুক হইয়া উঠিয়াছে। যাহা পায় খাদ্যাখাদ্য বিচার না করিয়া মুখে পুরিয়া দেয়। কালোর মা বলে, মুখে-প্রসাদ দেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।
কাজেই দুইদিন পরেই বাড়িতে আরো একটা উৎসবের অয়োজন হইল।
সেদিনও অনন্তর মার ডাক পড়িল। আরো অনেক নারীর ডাক পড়িল। গীত গাহিবার জন্য।
প্রথমে স্নানযাত্রা। ছেলেকোলে ছোটবৌকে মাঝখানে করিয়া গান গাহিতে গাহিতে নারীরা তিতাসের ঘাটে গেল। ছোট বৌ তিতাসকে নিজে তিনবার প্রণাম করিল, ছেলেকেও তিনবার প্রণাম করাইল। এক অঞ্জলি জল লইয়া তার মাথা ধোয়াইল। শাড়ির আঁচল দিয়া মুছিয়া নদীকে আবার নমস্কার করিয়া বাড়ি ফিরিয়া আসিল।