গৌরাঙ্গ অকারণে খেঁকাইয়া উঠিল, 'খালি তামুক খাইলে পেট ভর্ব?’
“কি খামু তবে?’
না, লোকটার কেবল পেটই শুখায় নাই। মাথাও শুখাইয়া গিয়াছে।
‘চল যাই বুধাইর বাড়ি।’
নয়ানপুরে বোধাই মালো টাকায় সব মালোদের চেয়ে বড়। বাড়িতে চার পাঁচটা ঢেউটিনের ঘর। দুই ছেলে রোজগারী লোক। বোধাই হাতীর মত মোটা ও কাল। শরীরেও হাতীর মত জোর। তার কারবার অন্য ধরণের। বড় বড় দীঘি ইজারা নিয়া মাছের পোনা ফেলে। মাছ বাড়িতে থাকে, আর তারা তিন বাপ বেটায় লোকজন লইয়া জাল ফেলে, মাছ তোলে, মাছ চালান দেয়। এ কাজে বোধাই অনেক লোকজন খাটায়। নদীতে জল না থাকিলে, মালোরা যখন দুই চোখে অন্ধকার দেখে তখন তারা যায় বোধাইর বাড়িতে।
কিন্তু তিতাসে কত জল! কত স্রোত! কত নৌকা! সব দিক দিয়াই সে অকৃপণ।
আর বিজয়-নদীর তীরে-তীরে যে-মালোরা ঘর বাঁধিয়া আছে, তাদের কত কষ্ট। নদী শুখাইয়া গেলে তাদের নৌকাগুলি অচল হইয়া থাকে আর কাঠ-ফাটা রোদে কেবল ফাটে।
তিতাস-তীরের মালোরা যারা সেখানে বেড়াইতে গিয়াছে,