পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
২৯৯

করব উজানীনগর, আর গাঙ্গের পারে পারে ধেনুক হাতে যাত্রা করব বেহুলা। দিশা কইরা তোল!’

 ‘অ, ঠিক, সুমন্ত্র চইলে যায়রে, যাত্রা কালে রাম নাম।’

 ‘রামায়ণের ঘুষা। তরণীসেন যুদ্ধে যাইতাছে। আচ্ছা, চলতে পারে।’

 ভেলা চলিয়াছে নদীর স্রোত ঠেলিয়া উজানের দিকে; তীরে বেহুলা, হাতে তীর ধনুক। কাক শুকুন বসিতে যায় ভেলাতে, পার হইতে বেহুলা তীর নিক্ষেপের ভঙ্গি করিলে উড়িয়া যায়। কত গ্রাম, কত নগর, কত হাওর, কত প্রান্তর, কত বন, কত জঙ্গল পার হইয়া চলিয়াছে বেহুলা, আর নদীতে চলিয়াছে লখিন্দরের ভেলা। এইখানে ত্রিপদী শেষ হইয়। দিশা শুরু।

 ‘এইবার চান্দসদাগরের বাড়িতে কান্নাকাটি। খেদের দিশা তোল।’

 বনমালী একটু ভাবিয়া তুলিল—

‘সাত পাঁচ পুত্র যার ভাগ্যবতী মা;
আমি অতি অভাগিনী একা মাত্র নীলমণি,
মথুরার মোকামে গেলা, আর ত আইলা না।’

 এই গানে অনন্তর বুক বেদনায় টন্ টন্ করিয়া উঠিল।

 গানের শেষে পুঁথি বাঁধিতে বাঁধিতে বাবাজী বলিলেন: অমূল্য রতনের মত ছেলে এই অনন্ত। কৃষ্ণ তাকে বিবেক দিয়াছে, বুদ্ধি দিয়াছে, তবে ভবার্ণবে পাঠাইয়াছে। ইস্কুলে দিলে ভাল বিদ্যা পাইত। তোমরা যদি বাধা না দাও,