পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬৬
তিতাস একটি নদীর নাম

আর অনন্তবালা। নামে নামে মিলছে। মনে মনেও মিলছে। কথাখান এই।’


 এমনি সময়ে পাশেই একখানা নৌকা ভিড়িয়াছে, তার মধ্যে একজন স্ত্রীলোককে আরেকজন স্ত্রীলোক এই বলিয়া প্রবোধ দিতেছে, ‘চিন্তা কইরা শরীর কালা কইর না দিদি। গাঙের বুকে কত লোক কত গান গাইয়া যায়, গাঙে কি তার রেখ্ থাকে?’

 এমন সময় অনন্ত ফিস্‌ফিস্ করিয়া অনন্তবালার কানের কাছে বলিল, ‘মাসী।’

 অনন্তবালার চোখ কৌতূহলে বড় হইয়া উঠিল। অনন্তর দৃষ্টি অনুসরণ করিয়া সে তার ঐতিহাসিক মাসীকে দেখিল।

 বিধবা নারী। এখনও তরুণীর পর্যায়েই দাঁড়াইয়া আছে, কিন্তু শরীরের লাবণ্য ধুইয়া গিয়াছে। মুখখানা সুন্দর, কিন্তু মলিন। দেখিলে মায়া লাগে।

 ‘এই মাসীই তোমারে তাড়াইয়া দিল!’

 ‘দিল ত!’

 মাসী ডাকে আকৃষ্ট হইয়া সুবলার-বৌ চকিতে ঘাড় ফিরাইয়া দেখিল, তারপর সহসা উদ্দাম হইয়া বলিয়া উঠিল, অনন্ত! আমার অনন্ত!

 দুই নৌকার বাতা লাগানো ছিল। লাফাইয়া সে এ নৌকাতে আসিয়া উঠিল এবং অনন্তর দিকে দুই হাত বাড়াইয়া দিল। মাসী মাসী বলিয়া অনন্তও হাত বাড়াইল। দেখিল,