পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৯০
তিতাস একটি নদীর নাম

ও বেহালা। গীতাভিনয়ের তিন রকমের তিনটা বই আসিল। আগে কেউ নামও শুনে নাই এমনি একটা পালার তালিম দেওয়া সুরু হইল। তামসীর বাপ আগে সেনাপতি সাজিত, তাকে দেওয়া হইল রাজার পাঠ। জানাইয়া দিল মালোপাড়ার ছেলেদের তারা সখীর পাঠ দিবে। অভিভাবকেরা ছেলেদের যাত্রাদলে যোগ দিতে নিষেধ করিল। তারা বিড়ি খায়, ঘাড়কাটা করিয়া চুল ছাঁটে, গুরুজনের সামনে বেলাহাজ কথা বলে। ঠাকুর দেবতার গান ছাড়িয়া পথেঘাটে সখীর গানে টান দেয়, এতে তাদের স্বভাবচরিত্র খারাপ হইয়া যায়।

 অন্য পাড়া হইতে সখী সংগ্রহ হইল। কিন্তু সাজ-মহড়া হইল মালোপাড়াতে। তামসীর-বাপের উপর মালোর চটিল। কিন্তু মালোর মেয়েরা মহড়া দেখিতে গিয়া মুগ্ধ হইল, কাঁদিয়া ভাসাইল এবং ছেলেদের সখী সাজিতে দিবে বলিয়া সঙ্কল্প করিল।

 পরের মহড়ায় মালোপাড়ার কয়েকটি ছেলে অন্য পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে সখী সাজিয়া নাচিল। বাম হাত কোমরে রাখিয়া ডান হাতের আঙ্গুল চিবুকে লাগাইয়া গাহিল, ‘চুপ্ চুপ্ চুপ্ লাজে সরে যাবে, ধীরে ধীরে চল্ সজনীলো। ধূলা দিয়ে সখী আমাদের চোখে গোপনে প্রণয় রেখেছে ঢেকে, এবার ভোমর যাবে লো ছুটে, চল্, না যেতে যামিনী লো, চুপ্ চুপ্’ ইত্যাদি।

 তাদের মায়েরা দিদিরা মুগ্ধ হইল। নাচখানা যেমন অপূর্ব গানখানাও তেমনি নূতন। এর ভাব, এর ভাষা, এর ভঙ্গি মালোদের গানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এর সুরও অন্য