পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৪০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৯৬
তিতাস একটি নদীর নাম

কালোবরণকে গিয়া বুঝাইতে চেষ্টা করিল: দেখ বেপারী, মালোপাড়ার যারা মাথা, সেই দয়ালচাঁদ, কৃষ্ণচন্দ্র, হরিমোহন সবইত যাত্রার দিকে ঝুঁকিয়াছে। ছিলাম এক, হইয়া গেলাম দুই, নিত্য রেষারেষি, নিত্য খোঁচাখুঁচি। কোন্ দিন আমরা নিজেরাই লগি-বৈঠা লইয়া মারামারি করিতে লাগিয়া যাইব তার ঠিক নাই। মালো পাড়ার মাথায় যারা এই বজ্র ডাকিয়া আনিল, শেষ পর্যন্ত তুমি তাদের পথেই পা বাড়াইলে! না বেপারী, তুমি আমাদের দলে থাক। চল, মাতবরদের বুঝাইয়া সুঝাইয়া আবার মালোপাড়াতে আগের মত একতা ফিরাইয়া আনি। আমরা যাত্রা গাহিব কেন। আমাদের কি গান নাই! ময়-মুরুব্বিরা কি আমাদের জন্য গান কিছু কম রাখিয়া গিয়াছে। সে সব গানের কাছে যাত্রা গানতো বাঁদী। সামনে ঘোর দুর্দিন দেখিতেছি। যাত্রা লইয়া পাড়াতে যাহা শুরু হইয়াছে, তাহার শেষ না জানি কত ভয়ানক হইবে, সেই চিন্তাই করি। এখন তুমিই ভরসা। আজ তোমার বাড়িতে যাত্রা গাহিয়া যাওয়ার অর্থই সারা মালোপাড়ার বুকের উপর বসিয়া যাত্রা গাহিয়া যাওয়া।

 কিন্তু কালোবরণ কথাগুলি শুনিয়াও যেন শুনিল না এইরকম ভাব দেখাইয়া চুপ করিয়া রহিল।

 তারা ক্ষুণ্ণমনে ফিরিয়া আসিল।

 ‘অ, মহন, অ মন্‌মহন, আর ভরসা নাই। কালনাগে দেখি তারেও খাইছে।’

 মনমোহন নিস্তেজ কণ্ঠে বলিল, আমাদিগকে ফেলিয়া