পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৪১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০৪
তিতাস একটি নদীর নাম

কালোবরণের বাড়ি একেবারেই নীরব ও নির্জন হইয়া গিয়াছে। মোহনের উঠানে লোকের আর ঠাঁই কুলাইতেছে না। বিজয়ের গর্বে উল্লসিত মোহন বলিয়া উঠিল, ‘ঠাকুর সকল, দুইখান নামগান গাইয়া যাও। আমি গিয়া খোল করতাল আনি।’

 নামগান আরও কঠিন। তাই বহুদিন ধরিয়া গাওয়া হয় না। আজ অনেকদিন পরে এক উঠানে সব মালো সমবেত হইয়াছে। এমন আর কোন্ দিন হইবে। তাই আজ একবার প্রাণ ভরিয়া নামগান গাহিতেই হইবে। এ গানের সুর খুব চড়া। গাহিতে খুব শক্তির দরকার। গায়কেরা চার ভাগে ভাগ হইয়া খণ্ডে খণ্ডে উহাকে গাহিয়া নামায়। একটি গান নামাইতে ঝাড়া এক প্রহর সময় লাগে।

 মোহন বলিল, ‘ঠাকুর সকল, সহচরী গাইবা না বস্ত্রহরণ গাইবা।’

 ‘সহচরী’ই গাহিবে ঠিক হইল।

 ‘সহচরী, উপায় বল কি করি,’ এই বলিয়া রাধা তার আক্ষেপ শুরু করিল। আমার অতি সাধের সাধনার ধন হারাইলাম। আগে জানিলে কি সই করিতাম প্রেম, তারে দিতাম কুলমান। যা হোক, অনেক চেষ্টা চরিত্র করিয়া তাকে তো প্রায় ভুলিয়াই গিয়াছিলাম। কিন্তু তোর একি করিলি, চিত্রপটে তার রূপ দেখাইয়া আমায় আবার কেন তাকে মনে করাইয়া দিলি। তোরা আমায় ধর; আমার জীবন যাইবার সময় উপস্থিত, তোরা আমায় ধর।

 গান শেষ হইল, যখন রোদ চড়িল তখন। মালোদের