‘মোড়ল!’
‘কি জাল্লা!’
‘তোমার দিকে চাইয়া আমার শিবঠাকুরের কথা মনে পড়ে। তোমার আত নামডাক, কিন্তু বাড়ি-ঘরের ছিরি নাই। তাজ্জবের কথা।’
মোড়ল তার আয়ত চোখ দুটি মেলিয়া তার স্নিগ্ধ দৃষ্টি কিশোরের চোখ দুটির মধ্যে ডুবাইয়া দিল।
‘আমার মনে পড়ে আরও একজন শিবের কথা। সে-শিব বুড়া। সকলের দরবারে তার নামডাক। কিন্তু ঘরে তার দৈন্যদশা।’
শিশুর মত বাধিত হইয়া মোড়ল বলিল, ‘তুমি আমারে শিব ঠাকুর বানাইলা। না জাল্লা, তুমি আমারে বুড়া শিব বানাইলা, আমার গৌরী বড় ভাল, তারে আবার নাচাইও না। আর, আম্রা ত শিবমন্ত্রী না, আম্রা কিষ্ণমন্ত্রী। তোম্রা কোন্ দেশের দেশী।’
জবাব দিল তিলক, ‘বিন্দাবনের।’
‘অ, বুঝলাম, তোমরাও কিষ্ণমন্ত্রী। কিষ্ণে মিলাইছে। রাইতে আনন্দ করা চাই, মনে থাকে যেন। অখন একটু গড়াইয়া যাও।’
উত্তম ভোজন পাইলে তিলকের পেট উঁচু হইয়া উঠে, নির্লজ্জভাবে অস্তিত্ব সপ্রমাণ করে। উহার সম্বন্ধে সচেতন হইয়া তিলক বলিল, ‘ঠিক কথাই কইছ মোড়ল। যা খাওয়াইছ, গড়াইয়াই যাইতে লাগ্বে, খাড়া হইয়া যাওয়ার ভর্সা খুব কম।’