পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
৬৭

 তিলকের এই কথায় সুবলের খুব লোভ হইল। কিন্তু তার মন অপ্রসন্ন। ধুতি গামছা দুইই তার ময়লা।

 কিশোর সমাধান বাতলাইয়া দিলঃ নদীর ওপারে হাট বসে। সাবান কিনিয়া আনিলেই হয়।

 কিন্তু এক টুকরা সাবানের জন্য এত বড় নদী পাড়ি দেওয়া চলেনা।

 শেষে সমাধান আপনা থেকেই হইয়া গেল।

 ভাটিতে বেদের বহর নোঙর করিয়াছে। বেদেনীরা আয়না চিরুনী সাবান বঁড়শি, মাথার কাঁটা, কাঁচের চুড়ি, পুঁতির মালা লইয়া নৌকা করিয়া শুকদেবপুরের ঘাটে ঘাটে বেসাত করিয়া যায়। সাপের ঝাঁপিও দুই একটা সঙ্গে থাকে।

 কিশোরেরা মাছ ধরায় ব্যস্ত। বেলা বাড়িয়াছে। আর একটু বাড়িলে মাছেরা অতলে ডুব দিবে। এখনি যত ছাঁকিয়া তোলা যায় নদী হইতে। উঠিতেছেও খুব। এমন সময়ে এক বেদেনী ডাক দিল, ‘অ দাদা, মাছ আছে?’

 কিনিতে আসিয়া তারা বড় বিরক্ত করে। তিলক ঝামু লোক। বলিল, ‘না মাছ নাই।’

 বেদেনীর বিশ্বাস হইল না। বৈঠা বাহিয়া তার বাবুই পাখির বাসার মত নৌকাখানা কিশোরদের নৌকার সঙ্গে মিশাইল। সে তার নিজের নৌকার দড়ি হাতে করিয়া লাফ দিয়া কিশোরের নৌকায় উঠিল, ডরার দিকে চাহিয়া বলিল, ‘কি জাল্লা, মাছ না নাই! চাইর পয়সার মাছ দেও।’

 কিশোরের জালে অনেক মাছ উঠিয়াছে। বাঁশের গোড়ায়