পাতা:তিনসঙ্গী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ল্যাবরেটরি
১২১

এখন থেকে জাগানী-ক্লাব-মেম্বররা নারীহরণের চর্চা শুরু করবে। জেগে উঠবে পৌরাণিক যুগ।”

 নীলা বললে, “বেশ মজা লাগছে শুনতে। নারীহরণ, পাণিগ্রহণের চেয়ে ভালো। কিন্তু পদ্ধতিটা কী রকম।”

 হালদার বললে, “দেখিয়ে দিতে পারি।”

 “এখনই?”

 “হাঁ, এখনই।”

 বলেই সোফা থেকে নীলাকে আড়কোলা করে তুলে নিলে।

 নীলা চীৎকার করে হেসে ওর গলা জড়িয়ে ধরলে।

 রেবতীর মুখ অন্ধকার হয়ে উঠল, ওর মুশকিল এই যে অনুকরণ করবার কিংবা বাধা দেবার মতো গায়ের জোর নেই। ওর বেশি করে রাগ হতে লাগল নীলার ’পরে, এই-সব অসভ্য গোঁয়ারদের প্রশ্রয় দেয় কেন।

 হালদার বললে, “গাড়ি তৈরি আছে। তোমাকে নিয়ে চললুম ডায়মণ্ডহারবারে। আজ সন্ধের ভোজে ফিরিয়ে এনে দেব। ব্যাঙ্কে কাজ ছিল, সেটা যাকগে চুলোয়। একটা সৎকার্য করা হবে। ডাক্তার ভট্‌চাজকে নির্জনে কাজ করবার সুবিধে করে দিচ্ছি। তোমার মতো অতবড়ো ব্যাঘাতকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়াই ভালো, এজন্যে উনি আমাকে ধন্যবাদ দেবেন।”

 রেবতী দেখলে, নীলার ছটফট করবার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না, নিজেকে সে ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টামাত্র করলে না, বেশ যেন আরামে ওর বক্ষ আশ্রয় করে রইল। ওর গলা জড়িয়ে রইল বিশেষ একটা আসক্তভাবে। যেতে যেতে বললে, “ভয় নেই বিজ্ঞানী সাহেব, এটা নারীহরণের রিহর্সল মাত্র— লঙ্কাপারে যাচ্ছি নে, ফিরে আসব তোমার নেমন্তন্নে।”

 রেবতী ছিঁড়ে ফেললে সেই লেখাটা। হালদারের বাহুর জোর এবং অসংকুচিত অধিকার বিস্তারের তুলনায় নিজের বিদ্যাভিমান ওর