হো হো লাগিয়েছে? মাথা-পিছু পঁচিশ টাকা ধরে নেয়, মদ না খেলেও মদের দাম ধরে দিতে হয়। খালি গেলাসের জরিমানা কম লাগল না। আর কেউ হলে মুখ চুপসে যেত। ওঁর দরাজ হাত দেখে ব্যাঙ্কের ডিরেক্টরের তাক লেগে গেছে। সিনেমার গাইয়েকে কত দিতে হয়েছে জানো?— তার এক রাত্তিরের পাওনা চারশো টাকা।”
রেবতীর মনের ভিতরটা কাটা কইমাছের মতে ধড়ফড় করছে। শুকনো মুখে কথাটি নেই।
সোহিনী জিজ্ঞাসা করলে, “আজকের সমারোহটা কিসের জন্যে।”
“ত জানো না বুঝি? অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসে তো বেরিয়ে গেছে, উনি জাগানী ক্লাবের প্রেসিডেণ্ট হয়েছেন, তারই সম্মানে এই ভোজ। লাইফ মেম্বরশিপের ছশো টাকা সুবিধেমত পরে শুধে দেবেন।”
“সুবিধে বোধ হয় শীঘ্র হবে না।”
রেবতীর মনটার মধ্যে স্টীম-রোলার চলাচল করছিল।
সোহিনী তাকে জিজ্ঞাসা করলে, “তা হলে এখন তোমার ওঠবার সুবিধে হবে না।”
রেবতী নীলার মুখের দিকে তাকালে। তার কুটিল কটাক্ষের খোঁচায় পুরুষমানুষের অভিমান জেগে উঠল। বললে, “কেমন করে যাই, নিমন্ত্রিতেরা সব—”
সোহিনী বললে, “আচ্ছা, আমি ততক্ষণ এখানে বসে রইলুম। নাসেরউল্লা, তুমি দরজার কাছে হাজির থাকো।”
নীলা বললে, “সে হতে পারবে না, মা। আমাদের একটা গোপন পরামর্শ আছে, এখানে তোমার থাকা উচিত হবে না।”
“দেখ্ নীলা, চাতুরীর পালা তুই সবে শুরু করেছিস, এখনো আমাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবি নে। তোদের কিসের পরামর্শ সে খবর কি আমি পাই নি। বলে দিচ্ছি, তোদের সেই পরামর্শের জন্যে আমারই থাকা সব চেয়ে দরকার।”
নীলা বললে, “তুমি কী শুনেছ, কার কাছে।”