কখনো তোমাকে কাজের কথা বলি নি। আজ বলে দেখব। নতুন অভিজ্ঞতা হবে।”
বিভা বললে, “তাই হোক, বাকি থাকে কেন।”
পকেট থেকে অভীক চামড়ার কেস বের করে খুলে দেখালে। একটা কবজিঘড়ি। ঘড়িটা প্লাটিনমের, সোনার মণিবন্ধ, হীরের টুকরোর ছিট দেওয়া। বললে, “তোমাকে বেচতে চাই।”
“অবাক করেছ, বেচবে?”
“হাঁ, বেচব, আশ্চর্য হও কেন।”
বিভা মুহূর্তকাল স্তব্ধ থেকে বললে, “এই ঘড়ি যে মনীষা তোমাকে জন্মদিনে দিয়েছিল। মনে হচ্ছে তার বুকের ব্যথা এখনো ওর মধ্যে ধুকধুক করছে। জানো সে কত হুঃখ পেয়েছিল, কত নিন্দে সয়েছিল আর কত দুঃসাধ্য অপব্যয় করেছিল উপহারটাকে তোমার উপযুক্ত করবার জন্যে?”
অভীক বললে, “এ নুড়ি সেই তো দিয়েছিল, কে দিয়েছে শেষ পর্যন্ত জানতেই দেয় নি। কিন্তু আমি তো পৌত্তলিক নই যে বুকের পকেটে এই জিনিসটার বেদি বাঁধিয়ে মনের মধ্যে দিনরাত শাঁখ ঘণ্টা বাজাতে থাকব।”
“আশ্চর্য করেছ তুমি। এই ক’মাস হল সে টাইফয়েডে—”
“এখন সে তো সুখদুঃখের অতীত।”
“শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সে এই বিশ্বাস নিয়ে মরেছিল যে তুমি তাকে ভালোবাসতে।”
“ভুল বিশ্বাস করে নি।”
“তবে?”
“তবে আবার কী। সে নেই, কিন্তু তার ভালোবাসার দান আজও যদি আমাকে ফল দেয় তার চেয়ে আর কী হতে পারে।”
বিভার মুখে অত্যন্ত একটা পীড়ার লক্ষণ দেখা দিল। একটুক্ষণ চুপ করে থেকে বললে, “এত দেশ থাকতে আমার কাছে বেচতে