পাতা:ত্রিপুরার স্মৃতি.djvu/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সূচনা

 পুরাকালের কীর্ত্তিমাল-পূর্ণ বিলুপ্ত গৌরব সুপ্রাচীন যে সমুদয় জনপদ বঙ্গভূমিতে অবস্থিত, তন্মধ্যে “ত্রিপুরা” নামে প্রসিদ্ধ দেশটী অন্যতম। এই প্রদেশের প্রাচীন ইতিহাস প্রত্নতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতগণ কর্ত্তৃক বিশেষরূপে আলোচিত হইয়াছে কিনা অবগত নহি; কিন্তু ইহা বলিলে অত্যুক্তি হইবে না—বঙ্গদেশস্থ অন্যান্য পুরাতন অঞ্চলেব তুলনায় এতৎপ্রদেশ কোন অংশেই হীন-গৌরবের হইবে না, বরং অধিক গৌরবান্বিত হওয়াই সম্ভব।

 “ত্রিপুরা” নামক উক্ত সুবিস্তীর্ণ প্রদেশেব প্রায অধিকাংশই অধুনা চন্দ্রবংশসম্ভূত বর্ত্তমান ত্রিপুরেশগণের অধিকাব-ভুক্ত। কিন্তু সুপ্রাচীনকালে তাঁহাদিগের পূর্ব্বপুরুষগণ যে সময়ে এতৎপ্রদেশের উত্তর পূর্ব্বাংশে রাজত্ব করিতেন, তৎকালে তাহার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তবর্ত্তী জনপদনিচয় যে পালবংশীয় নৃপতিগণের শাসনাধীন ছিল, তাহার নিদর্শন এই প্রদেশে প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে। এতদ্ব্যতীত এই অঞ্চল যে একদা অপরাপর বংশসম্ভূত নৃপালগণেরও অধিকারভুক্ত ছিল তাহা এতৎপ্রদেশস্থ কতিপয় প্রাচীন নিদর্শন প্রতিপন্ন করে।

 ন্যূনাতিবেক বিংশ বর্ষ পূর্ব্বে ত্রিপুরা জিলার অন্তঃপাতী “নুরনগর” পরগণার অন্তর্ভূত “বাঘাউরা” নামক প্রাচীন গ্রামস্থ একটী পুষ্করিণী হইতে যে চতুর্ভূজ নারায়ণ মূর্ত্তি উদ্ধৃত হইয়াছিল, তৎপাদপীঠে উৎকীর্ণ লিপি হইতে এইরূপ অবগত হওয়া যায়—“সমতট” দেশ খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর পালবংশীয গৌড়াধিপতি প্রথম মহীপালের শাসনাধীন ছিল। প্রাচীন ইতিহাসে লিখিত “সমতট” নামে সুপ্রসিদ্ধ দেশ—বর্ত্তমান বরিশাল, ফরিদপুর, ঢাকার পূর্ব্ব-দক্ষিণ ও ত্রিপুরার দক্ষিণাংশ বলিয়া খ্যাতনামা ইতিহাসকার “ভিনসেণ্ট স্মিথ্‌” বিরচিত ভারতবর্ষের ইতিহাসে উল্লেখ আছে।

 প্রাগুক্ত প্রস্তর-নির্ম্মিত চতুর্ভূজ বিষ্ণু-মূর্ত্তি উচ্চে প্রায় দুই হস্ত হইবে, এবং সুচারুরূপে নির্ম্মিত। মূর্ত্তিটীর পাদদেশের নিম্নভাগে যে লিপি উৎকীর্ণ আছে তাহা এই:—

ত্রিপুরার স্মৃতি