পাতা:ত্রিপুরার স্মৃতি.djvu/১৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



“অখ্যাতি রাখিতে চাহ আমা বংশে তুমি।
বলে, আসি দেখ রঙ্গ যুদ্ধ করি আমি ”

রাজমালা—সেংথুম্‌ফা খণ্ড

 এইরূপে তিনি তদীয় পতি ত্রিপুরেশকে ধিক্কার প্রদানপূর্ব্বক রণ-ডঙ্কা নিনাদ করিতে আদেশ প্রদান করিলেন। 

“এ বলিয়া ঢোলে বাড়ি দিতে আজ্ঞা কৈল।
যত সৈন্য সেনাপতি সব সাজি আইল॥
মহাদেবী জিজ্ঞাসিল বিনয় করিয়া।
কি করিব পুত্র সব কহ বিবেচিয়া।
গৌড় সৈন্য আসিয়াছে যেন যম কাল।
তোমার নৃপতি হৈল বনের শৃগাল॥
যুদ্ধ করিবারে আমি যাইব আপনে।
যেই জন বীর হও চল আমা সনে।
রাণীবাক্য শুনি সবে বীবদর্পে বলে।
প্রতিজ্ঞা করিল যুদ্ধে যাইব সকলে।”

রাজমালা—সেংথুম্‌ফা খণ্ড

 ত্রিপুরসৈনিকগণের উৎসাহ বাক্যে রাণী সন্তুষ্ট হইয়া তাহাদিগকে সেই রজনীতে তৃপ্তির সহিত পান-ভোজন করাইয়া তাহাদিগের উৎসাহ দ্বিগুণ বর্দ্ধন করিলেন।

 পরদিবস প্রত্যুষে ত্রিপুররাজমহিষী “ত্রিপুরাসুন্দরী দেবী” রণবেশে সুসজ্জিত হইয়া শূল হস্তে মত্তমাতঙ্গোপরি আরোহণপূর্ব্বক রণভূমিতে প্রবিষ্ট হন; এবং “চতুর্দ্দশ দেবতা” নামে প্রসিদ্ধ ত্রিপুররাজ-কুলদেবতার নাম উচ্চারণপূর্ব্বক বীরোচিত বাক্যের দ্বারা ত্রিপুর-সেনাগণকে উৎসাহিত করিয়া সমস্ত দিবস যবনগণের সহিত ঘোর সংগ্রামে নিযুক্ত থাকেন। রাণী সমর-প্রাঙ্গণে আবির্ভূত হইলে ত্রিপুরেশ কীর্ত্তিধরও তথায় গমনপূর্ব্বক মহিষীর সহিত যবনসেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগদান করেন।

 মহিষমর্দ্দিনী চণ্ডিকাসাদৃশ সেই রণরঙ্গিণীর ভীষণ সমরে অবিচলিত থাকা যবনগণের সাধ্যবহির্ভূত হইয়া পড়িল। পরিশেষে রবি অস্তাচলগামী হইবার

ত্রিপুরার স্মৃতি