পাতা:ত্রিপুরার স্মৃতি.djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



চণ্ডীমুড়া

 কুমিল্লা নগরীর পশ্চিমপ্রান্তে ন্যূনাতিরেক ৬ মাইল দূরে—“লালমাই” নামে খ্যাত যে দীর্ঘ পর্ব্বতমালা দৃষ্টি গোচর হয়, “চণ্ডিমুড়া” নামক তাহার দক্ষিণদিকের অরণ্যাবৃত শৃঙ্গোপরি বৃক্ষ-লতাজড়িত দুইটী সুপ্রাচীন মন্দির প্রতিষ্ঠিত আছে। সর্ব্বসাধারণ কর্তৃক মন্দিরদ্বয় “চণ্ডীমন্দির” নামে অভিহিত হয়। ত্রিপুরারাজ্যের সুপ্রসিদ্ধ প্রাচীন রাজধানী উদয়পুরে যে সমুদয় মন্দির সংস্থাপিত, উক্ত দুইটী মন্দির আকৃতিতে তদনুরূপ।

 মন্দির দুইটী খৃষ্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীতে ত্রিপুরেশ গোবিন্দ মাণিক্যের অনুজ জগন্নাথ দেবের দুহিতা, যুবরাজ চম্পকরায়ের সহোদরা “দ্বিতীয়া দেবী” কর্ত্তৃক নির্ম্মিত হইয়াছিল; এবং তিনিই তন্মধ্যে চণ্ডীমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। বঙ্গভাষায় লিপিত “রাজমালা” নামে প্রসিদ্ধ ত্রিপুররাজগণের জীবনচরিত গ্রন্থে এই বিষয় একম্প্রকার লিপিবদ্ধ আছে।—

“চম্পকরায় দেওয়ানছিল হৈল যুবরাজ।
তার ভগ্নী দ্বিতীয়া নামে করে পুণ্য কাজ॥
মেহের কুল উদয় পুর দীর্ঘিকা খনিল।
দৌল সেতু চণ্ডীমুড়া চণ্ডিকা স্থাপিল॥”

রাজমালা—রত্নমাণিক্য খণ্ড

 দৈত্যের বা দুত্যার দীঘী নামক যে জলাশয় চণ্ডীমুড়ার নিকট আছে, তাহাই উল্লিখিত দ্বিতীয়া দেবী কর্ত্তৃক মেহেরকুলে খনিত দীর্ঘিকা। কালক্রমে “দ্বিতীয়া” শব্দ অপভ্রষ্ট হইয়া “দৈত্য” বা “দুত্যা” রূপে পরিণত হইয়াছে।

 একটী মন্দির-মধ্যে চণ্ডীদেবীর প্রতিমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে, কিন্তু অপরটীতে কি মূর্ত্তি ছিল, অথবা তাহাতে কোন মূর্ত্তিই সংস্থাপিত হইয়াছিল কিনা ইহা অবগত হওয়া যায় না।

 মন্দিরদ্বয়-মধ্যে একটীর উর্দ্ধভাগ পর্য্যবেক্ষণ করিলে একদা তদ্গাত্রে কোন প্রস্তর-ফলক সংলগ্ন ছিল—এই প্রকার চিহ্ন স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয়। কিন্তু কোনও

ত্রিপুরার স্মৃতি
১৫