পাতা:ত্রিপুরার স্মৃতি.djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ভূপঃ শ্রীকৃষ্ণ মাণিক্য দেবোহদাদ্ধরি তুষ্টয়ে বস্বঙ্ক তর্কেন্দু মিতে শকাব্দে বিছাং গজস্যাপি রবেনবাংশে॥

পরদত্তাং ক্ষিতিং যস্তু রক্ষতি ক্ষ্মাপতিঃ প্রভূঃ।
সকোটী গুণমাপ্নোতি পুণ্যং দাতৃজনাদপি॥
যো হরেচ্চ মহীং তাবদ্দেবস্য ব্রাহ্মণস্য বা।
নতস্য দুস্কৃতি র্যাতি বর্ষকোটি শতৈরপি॥

  ইতি ১১৮৬—তারিখ ১ অগ্রহায়ণ॥
‌‌

  বর্ণিত মন্দিরের সম্বন্ধে, ত্রিপুরেশ কৃষ্ণ মাণিক্যের জীবন চরিত “কৃষ্ণমালা” নামক গ্রন্থে যে রূপ বিবৃত আছে, তৎপাঠে অবগত হওয়া যায় যে অধুনা “জগন্নাথ পুর” নামক গ্রামমধ্যস্থ সরোবরটী কৃষ্ণ মাণিক্যে খনন করাইয়া তন্মধ্যে ইষ্টকদ্বারা একটী কূপ নির্ম্মাণ পূর্ব্বক উহা পঞ্চতীর্থের সলিলে পূর্ণ করতঃ দীর্ঘিকাটী উৎসর্গ করেন। তদনন্তর তাহার পূর্ব্ব তীরে সপ্তদশ চূড়াবিশিষ্ট “সপ্তদশরত্ন” নামে প্রসিদ্ধ মন্দির সংস্থাপিত করিয়াছিলেন। ইহার মধ্যস্থ প্রধান চুড়া উচ্চে শত হস্ত, এবং চূড় নিচয়ের শিরোদেশ এক মন সুবর্ণে মণ্ডিত তাম্রকুম্ভ দ্বারা ভূষিত হইয়াছিল। দুই পাশ্বে দুইটী সিংহমূর্ত্তি শোভিত যে তোরণদ্বার মন্দিরের উত্তর দিকে অবস্থিত ছিল বলিয়া উক্ত গ্রন্থে উল্লেখ আছে, ইদানীং তাহার যৎসামান্য ধ্বংসাবশেষ মাত্র দৃষ্টি পথে পতিত হয়।

 মন্দিরে কোন রূপ শিলালিপি পরিলক্ষিত হয়না; এবং এই বিষয়ে কোন কথা বলিতে কেহই সক্ষম নহে। মন্দির গাত্রে শিলালিপি সংযোজিত না হইয়া তোরণ দ্বারেও শিলালিপি সংলগ্ন থাকা সম্ভব। তোরণটী বিধ্বস্ত হইলে শিলালিপি কোন ব্যক্তির দ্বারা অপসারিত হওয়া বিচিত্র নহে।

 বর্ণিত মন্দির নির্ম্মিত হওয়ার পর ইহার কোন রূপ জীর্ণ সংস্কার হইয়াছিল কিনা জ্ঞাত হওয়া যায় না। কিন্তু অধুনা ইহা রক্ষিত না হওয়াতে এবং খৃষ্টীয় উনবিংশ ও বিংশশতাব্দীর প্রবল ভূমিকম্পে ইহার কতিপয় চূড়া ও নানা অংশ বিধ্বস্ত হইয়াছে।

 ত্রিপুররাজবংশের অদ্বিতীয় গৌরব চিহ্ন “সতররত্ন” নামক এই সুপ্রসিদ্ধ মন্দিরট এবংবিধ ধ্বংসকবলে পতিত হইতে দেখিয়া অতিশয় দুঃখ বোধ হয়। ইহার সম্পূর্ণ রূপ জীর্ণ সংস্কার না করিয়া অধুনা যে অবস্থায় রহিয়াছে, সেই ভাবেও রক্ষিত না হইলে, এতৎ প্রদেশস্থ একটী সুপ্রসিদ্ধ প্রাচীন কীর্ত্তিচিহ্ন সম্পূর্ণ রূপে বিধ্বস্ত হইয়া চিরকাল তরে বিলুপ্ত হইবে।

ত্রিপুরার স্মৃতি
৩৫