পাতা:ত্রিপুরার স্মৃতি.djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু পরিশেষে সন্ন্যাসীর অনুনয় বিনয়ে বাধ্য হইয়া সাহেব কেবল এক রাত্রের জন্য মাত্র মূর্ত্তিটী রাখিতে সম্মত হন।

 সেই রজনীতে নিদ্রিতাবস্থায় ইলিয়েট সাহেব গোঁ গোঁ শব্দ করিতে থাকিলে তদীয় পত্নী জাগরিত হইয়া দেখিতে পান যে, মৃতপ্রায় তাঁহার স্বামীর মুখ হইতে রক্ত নিঃসৃত হইতেছে। তদবস্থ সাহেব তদীয় স্ত্রী-কর্ত্তৃক অনেক যত্ন ও শুশ্রূষার পর সংজ্ঞা লাভ করিলেও স্তব্ধীভূত হইয়া শূন্য দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকেন। তাঁহার এই প্রকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করিয়া তদীয় পত্নী নানা প্রকার সান্ত্বনা প্রদান করিলে পর সাহেব অতি কষ্টে ধীরে ধীরে কহেন—ঘুম ঘোরে তাঁহার এইরূপ অনুভূত হইয়াছিল, কোন ব্যক্তি যেন তাঁহাকে সবলে চাপিয়া কহিতেছে—রাজরাজেশ্বরী মূর্ত্তি যদি নিক্ষেপ কর তবে তোমার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী।

 এই ঘটনার পর ইলিয়েট সাহেব সুস্থ হইয়া রাজরাজেশ্বরী কালীর বর্ত্তমান মন্দিরটী নিজ ব্যয়ে নির্ম্মাণ করাইয়া দেন, এবং তাঁহার কুমিল্লাতে অবস্থান কাল পর্যন্ত বর্ণিত দেবীর সেবা-পূজাব ব্যয় নির্ব্বাহার্থে প্রত্যহ এক টাকা প্রদান করিতেন। বর্ণিত রাজরাজেশ্বরী কালী, একটী জাগ্রত দেবী বলিয়া সর্ব্বসাধারণের বিশ্বাস এবং এই প্রত্যয় মূলে সকলেই ইহাকে ভক্তিভরে পূজাঅর্চনা করিয়া থাকে।


ত্রিপুরার স্মৃতি
৩৯