পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রথম ভাগ

প্রথম পরিচ্ছেদ

প্রাচীন কথা

কঙ্কাবতীকে সকলেই জানেন। ছেলেবেলা কঙ্কাবতীর কথা সকলেই শুনিয়াছেন।

 কঙ্কাবতীর ভাই একটি আঁব আনিয়াছিলেন। আঁবটি ঘরে রাখিয়া সকলকে সাবধান করিয়া দিলেন,— “আমার আঁবটি যেন কেহ খায় না; যে খাইবে, আমি তাহাকে বিবাহ করিব।”

 কঙ্কাবতী সে-কথা জানিতেন না। ছেলেমানুষ! অত বুঝিতে পারেন নাই, আঁবটি তিনি খাইয়াছিলেন।

 সে জন্য ভাই বলিলেন,— “আমি কঙ্কাবতীকে বিবাহ করিব।”

 মাতা-পিতা সকলে বুঝাইলেন,— “ভাই হইয়া কি ভগিনীকে বিবাহ করিতে আছে?”

 কিন্তু কাহারও কথা তিনি শুনিলেন না। তিনি বলিলেন, —“কঙ্কাবতী আমার আঁব খাইল কেন? আমি নিশ্চয় কঙ্কাবতীকে বিবাহ করিব।”

 কঙ্কাবতীর বড় লজ্জা হইল, মনে বড় ভয় হইল। নিরুপায় হইয়া তিনি একখানি নৌকা গড়িলেন। নৌকাখানিতে বসিয়া খিড়কি পুকুরের মাঝখানে ভাসিয়া যাইলেন। ভাই আর তাহাকে বিবাহ করিতে পারিলেন না।

 কঙ্কাবতীর গল্প এইরূপ। একথা কিন্তু বিশ্বাস হয় না। একটি আঁবের জন্য কেহ কি আপনার ভগিনীকে বিবাহ করিতে চায়? কথা সম্ভব নয়। যাহা সম্ভব, তাহা আমি বলিতেছি।


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

কুসুমঘাটী

সহর অঞ্চলে নয়, বন্য প্রদেশে, কুসুমঘাটী বলিয়া একখানি গ্রাম আছে। গ্রামখানি বড়, অনেক লোকের বাস। গ্রামের নিকটে মাঠ। সেকালে এই মাঠ দিয়া অনেক লোক যাতায়াত করিত। সুবিধা পাইলে, নিকটস্থ গ্রামসমূহের দুষ্ট লোকেরা পথিকদিগকে মারিয়া ফেলিত ও তাঁহাদের

কঙ্কাবতী