পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমীরের চক্ষু হইতে বুক বহিয়া অবিরত জল পড়িতে লাগিল। প্রিয়তমা গৃহলক্ষ্মীকে গৃহে না দেখিয়া গৃহ শূন্য, জগৎ শূন্য, হৃদয় শূন্য,-আমীর সবই শূন্য দেখিতে লাগিলেন। কেবল শূন্য নয়, গ্ৰীষ্মকালের আতপতাপিত বালুকাময় মরুভূমির ন্যায় ধূ-ধূ করিয়া হৃদয় তাহার জুলিতে লাগিল। “আমি আমার অমূল্য নারী-রত্নকে আপন হাতেই বিলাইয়া দিলাম; আমার কথামত তাহাকে জিনেই লইয়া গেল, কি ভূতেই লইয়া গেল, কি স্বয়ং শয়তান আসিয়াই লইয়া গেল, কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। হায়! হায়! কি হইল!” এইরূপে আমীর নানাপ্রকার খেদ করিয়া কাঁদিতে লাগিলেন। অবশেষে চক্ষু মুছিয়া, দ্বার খুলিয়া পাড়া-প্রতিবাসীকে ডাকিলেন। পাড়াপ্রতিবাসীরা সকলে দৌড়িয়া আসিল। সকলেই পুনরায় অন্ন অন্ন করিয়া আমীরের বাটী অন্বেষণ করিল। আমীরের বাটী দেখিবার পর, পাড়ার এ-ঘরে ও-ঘরে যথাবিধি অন্বেষণ হইল। গলিঘুজি সকল স্থানই দেখা হইল। খুঁজিতে আর কোথাও বাকী রহিল না, কিন্তু আমীরের স্ত্রীকে কেহই খুজিয়া পাইলেন না। প্ৰতিবাসীরা ক্ৰমে কানাকানি করিতে আরম্ভ করিল, নিশ্চয় আমীরের বিবি কোনও পুরুষের সঙ্গে বাহির হইয়া গিয়াছে। এরূপ সুন্দরী নব-যৌবনা রমণী এই দোষ । এক ত’ স্ত্রী গেল, তারপর যখন এই কলঙ্কের কথা আমীরের কানে উঠিল, আফিমচী হউন, তখন তাঁহার হৃদয়ে বড়ই ব্যথা লাগিল। তিনি ভাবিলেন, —“দূর হউক, এ সংসারে আর থাকিব না, লোকের কাছে আর মুখ দেখাইব না, ফকিরী লইয়া দেশে দেশে বেড়াইব, যদি সে প্ৰিয়তমা লায়লারূপী সার্ধবীকে পুনরায় পাই, তবেই দেশে ফিরিয়া আসিব, না হইলে মজনুর মত এ ছার জীবন একান্তই বিসর্জ এইরূপ ভাবিয়া-চিন্তিয়া, ফকিরের বেশে অ্যাফ্টম্বর হইতে বাহির হইলেন। সূঙ্গ কিছুই লাইলেন না;—লইলেন কেবল একটি টিনূেরুঞ্জীটা, একটি বাঁশের নল, আর একটি লোহার ছলেনুSষ্টটিনের কীেটার ঢাকনের উপর কােচ দেওয়া ছিল, আকুসির মতু তাহাতে মুখ দেখা মূখ্রষ্ঠ পান খাইয়া আমীর তাহাতে কুখন কখন মুখ দেখিতেন, ঠোঁট লাল হইল কি না Y বঁাশের নলটি তাহার বড়ই সাধের জিনিস ছিল। এক সাহেবের সঙ্গে খানসামা হইয়া একবার তিনি পাহাড়ে গিয়াছিলেন, সেইখানে এই সখের জিনিসটি ক্রয় করেন। ইহার গায়ে হিজি-বিজি কালো-কালো অনেক দাগ ছিল। আমীর মনে করিতেন, নলের সেগুলি অলঙ্কার, তাই সেই হিজি-বিজিগুলির বড়ই গৌরব করিতেন। বস্তৃতঃ কিন্তু সেগুলি অলঙ্কার নহে, সেগুলি অক্ষর,-চীন ভাষার অক্ষর। তাহাতে লেখা ছিল,— “চীনদেশীয় মহাপ্ৰাচীরের সন্নিকট লিংটিং সহরের মোপিঙ নামক কারিগরের দ্বারা এই নলটি প্রস্তুত হইয়াছে। নল-নিৰ্ম্মাণ কাজে মোপিঙ অদ্বিতীয় কারিগর, জগৎ জুড়িযা তাহার সুখ্যাতি । বাজে মেকরদিগের কাছে গিয়া যেন বৃথা অর্থ নষ্ট না করেন। মােপিঙের নল ক্রয় করিয়া যদি কাহারও মনােনীত না হয়, তাহা হইলে নল ফিরাইয়া দিলে, মোপিঙ তৎক্ষণাৎ মূল্য ফিরাইয়া দিবেন।” যাহা হউক, আমীর যে নলটি কিনিয়াছিলেন, মনের মত হইয়াছিল। তাই রক্ষা। না। হইলে, মূল্য ফেরত লইতে হইত। যুধিষ্ঠির যে পথ দিয়া স্বর্গে গিয়াছিলেন, সেই তুষারময় হিমগিরি অতিক্রম করিয়া, তিব্বতের পর্বতময় উপত্যকা পার হইয়া, তাতারের সহস্ৰ ক্রোশ তবে মোপিঙের সহিত সাক্ষাৎ হইত, মোপিঙ সিকিট ফিরাইয়া দিতেন। তাই বলি, ধৰ্ম্মে রক্ষা Geoffrefore alsifizie Adva uskla »ižo 333) a www.amarboi.comio