পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুচড়াইয়া দিতে পারি। আমার অবধ্য, সেই ইংরেজী-পড়া বাবুলোক। তাঁহাদের ভয়ও করি, ভক্তিও করি। পাছে মহাপ্রভুরা গায়ে টলিয়া পড়েন, কি বমন করিয়া দেন। ভক্তি করি, কেন না, এটা-সেটা খাইয়া তাঁহাদের মনের কোেচকা ঘুচিয়া যায়, মন সরল হইয়া যায়, এই মৰ্ত্ত্যলোকেই তাহারা সদাশিবত্ব প্রাপ্ত হন, অন্য লোকের মত তাঁহাদের মন জিলেপির পাকবিশিষ্ট নয়।” ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, “প্ৰভু! আমি নিজের জন্য আপনার নিকট ভিক্ষা করিতে আসি নাই। আপনার প্রসাদে আমার আর কিছুর ভাব নাই। এই লোকটি নিদারুণ সন্তাপিত হইয়াছে, ইহার নিমিত্তই আমি আপনার নিকট আসিয়াছি।” এই কথায় ভূতের রাগ কিছু পড়িয়া আসিল। সে জিজ্ঞাসা করিল,—“সঙ্গে তোমার ও লোকটি কে?” ব্ৰাহ্মণ তখন আমীরের সকল কথাই ভূতকে শুনাইলেন!! শুনাইয়া বলিলেন, — “মহাশয়! আপনাকে ইহার একটা উপায় করিতে হইবে, না করিলে এ লোকটি প্ৰাণে মরিবে। আপনি দয়াৰ্দ্ধচিত্ত, আমার প্রাণরক্ষা করিয়াছিলেন, ইহারও প্রাণরক্ষা করুন।” ভূত বলিল, . "ইহার স্ত্রীকে নিশ্চয় লুলু লইয়া গিয়াছে। লুলু সবে নূতন ভূতগিরি পাইয়াছে, ভূতগিরিতে তাহার নব অনুরাগ, সে বড়ই দুরন্ত।” ব্ৰাহ্মণ জিজ্ঞাসা করিলেন,-“নূতন ভূতগিরি পাইয়াছে? মহাশয়! সে কি প্রকার কথা? ভূত হাসিয়া বলিল,—“একথা তোমরা কিছুই জান না। লোকে বলে, অমুক মানুষ মরিয়া ভূত হইয়াছে। ঠিক সেটি সত্য নয়। মানুষ নিজে মরিয়া নিজের ভূত হয় না। মানুষ মরিলে আমরা কেহ গিয়া তাহার ভূতগিরি করি। লক্ষ লক্ষ ভূত পৃথিবীতে অবস্থিতি করিতেছে। কেহ বা ভূতগিরি করিবার কৰ্ম্ম পাইয়াছে, আবার কেহ বা বেকার বসিয়া আছে। আমাদের যিনি কৰ্ত্তা, তিনিই ভূতাদিগকে নিযুক্ত করেন। ভূতকে তিনি বলেন,-“যাও অমুক মানুষের সঙ্গে সঙ্গে থাক তাহার ভূত হইও, তাহার ভূতগিরি তোমাকে দিলাম। সেই দিন হইতে ভূতটি র সঙ্গে সঙ্গে থাকে। মানুষের মাথাটি ধরিলে তাহার আর আনন্দের পরিসীমা থাকে। ক্লাির্ন না, মরিলেই তাহার ভূতগিরি করিতে পাইবে। এরূপ যে ঘটনা হয়, সে কেবল তোমস্ট্রির নিজ দোষে। দেশীয় সংবাদপত্ৰসকল তোমাদিগকে কত সুশিক্ষা দিয়া থাকে, যদি কায়মনচিত্তে পালন করিতে, তাহা হইলে তোমাদের এ দুৰ্দশা হইত না । এই দেখ দেশ একেবারে নিদ্ধান হইয়া যাইতেছে, বিলাতী কাপড়ের দ্বারা বিদেশীয়েরা ধন লুটিতেছে! ভাল, কাপড় না পরিলেই ত’ হয়? যদি কাপড় না পর, তাহা হইলে ত” আর তোমাদিগের ধন কেহ লুটিতে পারে না। রেল করিয়া বিদেশীয়েরা ধন লইয়া যাইতেছে। ভাল, রেলে না চড়িলেই ত’ হয়, পায়ে হাঁটিয়া কেন কাশী-বৃন্দাবন যাও না? তা যদি কর, তাহা হইলে বিদেশীয়েরা তোমাদিগের দেশে রেল করিতে কখনই আসিবে না, দেশের ধন দেশেই রহিয়া যাইবে। সেইরূপ আমরা তোমাদিগের ভূতগিরি করি। আমরা তোমাদিগের ভূতগিরি করিবার উমেদারিতে থাকি। ভাল, তোমরা যদি মরা ছাড়িয়া দাও, তাহা হইলে তো কেহ তোমাদের ভূতগিরি করিতে আসে না? তাই বলি, না মরিলেই ত’ সকল কথা ফুরাইয়া যায়। নিজে তোমরা মরিবে, আর যত দোষ আমাদের? অপরাধের মধ্যে এই যে, মরিলে আমরা তোমাদিগের ভূতগিরি করি।” “যাহা হউক, লুলু বহুদিন হইল, ভূতগিরি করিবার জন্য দরখাস্ত করিয়াছিল। তাহার কপালে ভাল ভূতগিরি কোথাও জুটে নাই। অবশেষে কৰ্ত্তা তাহাকে দুখিরাম চণ্ডালের ভূতগিরি উমেদারিতে নিযুক্ত করেন। দুখিরাম যদিও বৃদ্ধ হইয়াছিল, তথাপি তাহার শক্তি-সামৰ্থ্য বিলক্ষণ ছিল। কিছুতেই মরিতে চায় না। বৃদ্ধের কুব্যবহারে লুলু বড়ই বিরক্ত হইয়াছিল। আজ SVAR দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comািৰ্লাক”********