পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাকিম আলির বাটীতে গিয়াছিলাম। আমার সহিত কতকগুলি পারিষদও ছিল, যাহারা এরূপ গৃহ কখনও দেখে নাই। জলাশয়টি দীৰ্ঘে-প্রস্থে প্রায় ছয় গজ, ইহার পাশে একটি কামরা, যাহাতে উত্তমরূপ আলো ছিল, এবং যাহার ভিতর যাইতে হইলে এই জলের ভিতর দিয়া ভিন অন্য পথ ছিল না। কিছু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, এই কামরায় একবিন্দুও জল প্ৰবেশ করিতে পারে না। কামরায় দশ-বার জন লোক বসিতে পারে! ইহার ভিতর হাকিম আমাকে টাকা ও বহুমূল্য দ্রব্যাদি উপটৌকন দিলেন। কামরা দেখিয়া আমি বাটী ফিরিয়া আসিলাম। হাকিমকে পুরস্কারস্বরূপ দু'হাজারীর পদে নিযুক্ত করিলাম।” এক্ষণে ইতিহাস দ্বারা ও গল্পটি সত্য বলিয়া প্রমাণ হইল। পৃথিবীতে যে কত অদ্ভুত বিষয় আছে, তাহা শুনিলে অবাক হইতে হয়। আমীর পাহাড়ের গৰ্ত্তে লুকাইয়া রহিলেন। ক্রমে সন্ধ্যা হইল, যখন কতক রাত্রি গত হইয়া গেল, তখন সেই গিরিগহবরে সহসা তুমুল ঝড় উঠিল। কিয়ৎক্ষণ পরে জলের ভিতরও ভয়ানক শব্দ হইতে লাগিল। আমীর কান পাতিয়া শুনিলেন, কে যেন জল ফুড়িয়া উপরে যাইতেছে। ভাবিলেন, —“রাত্রি হইয়াছে, এইবার ভূত বুঝি চরিতে যাইতেছে।” যখন পুনরায় সে-স্থান নিঃশব্দ হইল, তখন আমীর আস্তে আস্তে গৰ্ত্ত হইতে বাহির হইলেন। অতি সাবধানে, এ-ঘর সে-ঘর, অর্থাৎ-কি না। এ-গৰ্ত্ত সে-গৰ্ত্ত খুঁজিতে লাগিলেন। খুঁজিতে খুঁজিতে অতি দূরে একটি সামান্য আলো তাঁহার নয়ন-গোচর হইল। সেই দিবকৃপানে গিয়া দেখিলেন, অপেক্ষাকৃত এক বৃহৎ ঘরের ভিতর একটি প্রদীপ মিট্ৰ মিটু করিয়া জুলিতেছে। সেই প্রদীপের কাছে গালে হাত দিয়া, মস্তক অবনত করিয়া, এক মলিন-বসনা বিরস-বদুনা৷ ললনা বসিয়া রহিয়াছেন। কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়া আমীর চিনিতে পারিলেন যে, এই রমণীষ্ট’ৰ্তাহারই স্ত্রী। স্ত্রীকে দেখিয়া তাঁহার বক্ষঃস্থলে যেন হাতুড়ির ঘা পড়িতে লাগিল। য়র আবেগ উপস্থিত হইল যে, মনে করিলেন, এখনি দৌড়িয়া গিয়া ধরি, আর বলিষ্ট27–“প্রিয়তমে! জানি!! আর ভয় নাই, আমি |” কিন্তু আপনাকে সংবরণ করিলেন, মনে আমরা ভূতের হাতে! এখন ত’ স্ত্রীকে উদ্ধার করিতে করিয়াছে। একেবারে দেখা দেওয়া হইবে না। আমি যে এখানে আসিয়াছি, ক্রমে জানিতে দিব।” এই ভাবিয়া কিছুক্ষণের নিমিত্ত আমীর একটু অন্তরালে দাঁড়াইয়া রহিলেন। আমীররমণী কাঁদিতেছিলেন। অবিরল ধারায় অশ্রুস্রোত তাহার নয়নযুগল হইতে বহিতেছিল। মাঝে মাঝে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিতেছিলেন, এক একবার চক্ষু মুছিতেছিলেন, কখনও কখনও অপরিস্ফুট ভাষায় খেদোক্তিও করিতেছিলেন। বলিতেছিলেন,-“হায়! আমার দশা কি হইল! শয়তানের হাতে পড়িয়া আমার জাতিকুল সকলি মজিতে বসিল। ধৰ্ম্ম বিনা স্ত্রীলোকের আর পৃথিবীতে আছে কি? ভূতই হউক আর শয়তানই হউক, এ ধৰ্ম্ম আমি তাহাতে কখনই বিনাশ করিতে দিব না। সে দুৰ্ব্বত্ত অঙ্গীকার করিয়াছে, একবৎসরকােল আমাকে কিছু বলিবে না। এই একবৎসরের মধ্যে দুৰ্ব্বলের বল, নিঃসহায়ের সহায় ঈশ্বর কি আমার পাপিষ্ঠের হাত হইতে মুক্ত করিবেন। না? আমীর! আমীর!! একবার আসিয়া দেখ, আমার কি দশা হইয়াছে।” আমীর আস্তে আস্তে বলিলেন,—“ভয় নাই, ঈশ্বর তোমার প্রতি কৃপা করিয়াছেন, আমি আসিয়াছি।” আমীর-রমণী চমকিত হইয়া মুখ তুলিলেন। চক্ষুদ্বয় তখন তাঁহার জলে প্লাবিত ছিল, কিছুই দেখিতে পাইলেন না। ভাবিলেন, মনের ভ্রান্তিবশতঃই তিনি এরূপ শব্দ শুনিলেন। তবুও মনে একটু আশার সঞ্চার হইয়াছিল। কিন্তু সহসা চক্ষু মুছিতে সাহস করিতেছিলেন না; পাছে সত্য সত্যই ভ্ৰান্তি ष्ट्रप्ठ ७ 5fiटरु YWes» sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro