পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ পৰ্ব্ব নেই-আঁকুড়ে দাদা যমদূত বলিতেছেন,-“নেই-আঁকুড়ে দাদার একটি বিধবা ভগিনী ছিলেন। একাদশীর দিন বৈকাল-বেলা বাড়ীর নিকট বাগানে বেড়াইতে বেড়াইতে তিনি দেখিতে পাইলেন যে, একটি কলাগাছে দিব্য একখানি আঙটি পাতা হইয়া রাহিয়াছে। মনে মনে করিলেন যে, কাল এই আঙটি পাতাখনিতে আমি ভাত খাইব । দৈবের কৰ্ম্ম, সেই রাত্রিতে তাঁর মৃত্যু হইল। বিধবা অতি পুণ্যবতী ছিলেন। সেই জন্য বিষ্ণুদূতেরা তাঁহাকে বৈকুণ্ঠে লইয়া যাইবার নিমিত্ত আসিল। এদিকে আবার একাদশীর দিন খাবার বাসনা করিয়াছিলেন, সুতরাং আমরাও তাঁহাকে লইতে যাইলাম। বিধবাকে লইয়া বিষ্ণুদূতে ও যমদূতে কাড়াকড়ি উপস্থিত হইল। ক্ৰমে শ্ৰাদ্ধ গড়াইল! সেই ঘরের ভিতর, সেই রাত্রিতে, বিষ্ণুদূতে আর যমদূতে ঘোরতর যুদ্ধ বাধিয়া গেল! অবশেষে আমরা জিতিলাম। বিষ্ণুদূতাদিগকে তাড়াইয়া দিলাম। যেমন তোমাকে লইয়া যাইতেছি, সেইরূপ বিধবাকেও কাঁটাবন দিয়া হিড়ি হিড়ি করিয়া টানিয়া লইয়া চলিলাম। যমপুরীতে লইয়া উপস্থিত করিলাম। বিধবার মাথায় ক্রমাগত ডাঙ্গস মারিতে যম হুকুম দিলেন। ডাঙ্গসের প্রহারে জরা-জার হইয়া বিধবা পরিত্ৰাহি ডাক ছাড়িতে লাগিল। আর মাঝে মাঝে বলিতে লাগিল যে,-“হায় রে! যদি আমার নেই-আঁকুড়ে দাদা এখানে থাকিত, তাহা হইলে দেখিতাম, কি করিয়া যম আমার এরূপ সাজা দিওঁ?” যমের কানে সেই কথাটি প্রবেশ করিল। যম জিজ্ঞাসা করিলেন,—“মাগি কি বুর্জিািতছে?” আমরা বলিলাম,—“বিধবা বলিতেছে যে, আমার নেই-আঁকুড়ে দাদা এখৃষ্টন’থার্কিত, তাহা হইলে দেখিতাম, যম কি করিয়া আমায় এরূপ সাজা করিত।” যমেৱং জ্ঞাগ হইল। যম বললেন, নিয়ে আয় তাে রে ওর নেই-আঁকুড়ে দাদাকে দেখি কি কুঠুরিয়া সে আপনার বোনকে বীচায়?” নেই-আঁকুড়ে দাদাকে আনিতে আমরা দৌড়িলাম -আঁকুড়ে দাদা ঘরে নিদ্রা যাইতেছিলেন। ভগিনী যে মরিয়াছে, ভগিনীর যে এরূপ দুৰ্দশা হইয়াছে, তাহার তিনি কিছুই জানিতেন না। আমরা তাঁহাকে উঠাইলাম। আমরা বলিলাম—“চলুন, যম আপনাকে ডাকিতেছেন।” তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, —“আমার কি সময় হইয়াছে?” আমরা বলিলাম;—“না, আপনার এখনও সময় হয় নাই, এই শরীরেই আপনাকে একবার যমের বাড়ী যাইতে হইবে। একটা কথার মীমাংসা করিয়া আপনি ফিরিয়া আসিবেন।” নেই-আঁকুড়ে দাদা জিজ্ঞাসা করিলেন, —“কথাটা কি? শুনিতে পাই না? যমের বাড়ী গিয়া তাহার ভগিনী কি বলিয়াছিলেন, আমার সে সব কথা তাঁহাকে খুলিয়া বলিলাম, নেই-আঁকুড়ে দাদা বলিলেন, —“বটে। আচ্ছা, চল যাই।” পথে যাইতে যাইতে নেই-আঁকুড়ে দাদা ক্ৰমাগত বলিতে বলিতে চলিলেন, —“দেখ, এই স্থলে আমি একটি দেবালয় করিব মানস করিয়াছি।” আবার খানিক দূর গিয়া,-“এই স্থলে আমি একটি অতিথিশালা করিব, আমার এই ইচ্ছা।” আবার খানিক দূর গিয়া, “সাধারণে জলপান করিবে বলিয়া এই জলাশয়টি আমি করিয়া দিয়াছি।” এইরূপ স্কুল, কলেজ, ডাক্তারখানা, রাস্তা, ঘাট করিবার কথা আমাদিগকে শুনাইয়া শুনাইয়া বলিতে লাগিলেন!। যমপুরীতে উপস্থিত হইলাম, যমের সম্মুখে নেই-আঁকুড়ে দাদাকে খাড়া করিয়া দিলাম। যাম বলিলেন, —“নেই-আঁকুড়ে শোন, তোর বোন ব্ৰাহ্মণের ঘরের বিধবা । একাদশীর দিন আঙটি পাতে ভাত খাইবার মানস করিয়াছিল। সেই পাপের জন্য আমি তার মাথায় ডাঙ্গস মারিতে হুকুম দিয়াছি। সে বলে, YO দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboicon-3 tie