পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কামড়াইয়া দেয়, সেই ভয়ে দেবীসিংহ পলাইবার উদ্যোগ করিলেন। পলাইতে না পলাইতে বীর হনুমান তাঁহাকে বলিলেন, —“আমার গাছতলা তুমি অপবিত্ৰ করিলে কেন? তোমার কি দেবীসিংহ উত্তর করিলেন,—“আজ্ঞা, না মহাশয়! কৃপ্তানি মতলব কেন হইবে? এই দেখুন, আমার মাথায় শিখ রহিয়াছে!” বীর হনুমান বলিলেন,-“কে দেখি?” দেবীসিংহ, বীর হনুমানের দিকে মস্তক অবনত করিলেন। টিকির মৰ্যাদা-রক্ষক বীর হনুমান বাম-হাত দিয়া টিকিট ধরিলেন; ধরিয়া, একবার এদিক একবার ওদিক করিয়া টান মারিতে লাগিলেন, আর বলিতে লাগিলেন,-“বেশ টিকিটা! বাঃ দিব্য টিকিট!” কিন্তু টিকিট ভাল হইলে কি হইবে, দেবীসিংহের এদিকে প্ৰাণ বাহির হইতে লাগিল, মুগুটি ছিড়িয়া যাইবার উপক্রম হইল, দেবীসিংহের চক্ষে জল আসিল। টিকির টানে একবার তাহার ঘাড়টি খুঁটু করিয়া উঠিল। ঘাড়টি যেই খুঁটু করিল, আর দেবীসিংহ জ্ঞান হারাইলেন। তাহার পর কি হইল, তিনি কিছুই জানেন না। যখন পুনরায় জ্ঞান হইল, তখন দেবীসিংহ দেখিলেন যে, মাটিতে পড়িয়া রহিয়াছেন। দুই-এক ফোঁটা তাহার গায়ে পড়িতেছে। আশেপাশে অনেকগুলি পুরুষমানুষ, মেয়েমানুষ, বালক-বালিকা—সব দাঁড়াইয়া আছে। সকলেই অপরিচিত। দেবীসিংহ যেই চক্ষু চাহিলেন, আর চারিদিকে আনন্দধ্বনি হইল। সকলে বলিল, র কোনও ভয় নাই। ধৰ্ম্মদত্ত এইবার প্ৰাণ পাইল। ধৰ্ম্মের মা! আর কাদিও না, আর কুঁনিও ভয় নাই। বাছাকে লইয়া এখন ঘরে হাত দিয়া বলিলেন,-“ধৰ্ম্মদত্ত! ব: ছুক্তামার! এখন একটু কি ভাল হইয়াছ?” দেবীসিংহ উত্তর করিলেন, —“তুমি কে? আমি তো তোমাকে চিনি না! আমার নাম তো ধৰ্ম্মদত্ত নয়! আমার নাম যে দেবীসিং!” স্ত্রীলোকটি কাতরস্বরে বলিলেন,-“কৈ গা। আমার ধৰ্ম্মের তো এখনও জ্ঞান হয় নাই! আমার ধৰ্ম্মদত্ত তো কৈ এখনও ভাল হয় নাই। সে কি বাবা ধৰ্ম্ম! দশমাস দশদিন তোমাকে গর্ভে ধরিলাম, আজ এগার বৎসর ধরিয়া প্ৰতিপালন করিলাম, আমাকে তুমি চিনিতে পার না? সকলে বলিলেন,-“ধৰ্ম্মের মা! ভাবিও না, জলে ডুবিয়া যাইলে ওরূপ হয়। এখনি জ্ঞান হইবে, সকল কথা মনে পড়িবে। ধৰ্ম্মদত্ত! ঐ দেখ, তোমার পিতা ভারতসিংহ বিষগ্রমনে বসিয়া আছেন। ঐ দেখ, রামসেবক, যিনি তোমাকে নদীর জল হইতে তুলিয়াছেন!! এই দেখ, তোমার খেলাইবার সঙ্গী, প্ৰতাপ ও মহাবীর। আর এই দেখ, বীরবালা, যে খেলা করিতে করিতে নদীর জলে পড়িয়া গিয়াছিল। যাহাকে বীচাইবার নিমিত্ত তুমি জলে ঝাঁপ দিয়াছিলে। কিনারার দিকে যাহাকে ঠেলিয়া দিয়া, তুমি নিজে গভীর জলে ডুবিয়া গিয়াছিলে। ভাগ্যক্রমে মহাবীর, প্রতাপ প্রভৃতি বালকেরা চীৎকার করিয়া উঠিল। ভাগ্যক্রমে রামসেবক সেই পথ দিয়া যাইতেছিল। তাই তো বাছার প্রাণরক্ষণ হইল! তা না হইলে ভারতসিংহের আজ কি সৰ্ব্বনাশই হইত! ধৰ্ম্মদত্ত। এই দেখ, বীরবালা। বীরবালাকে চিনিতে পাের?” দেবীসিংহ বীরবালার পানে চাহিয়া দেখিলেন। দেখিলেন, —বীরবালা একটি পাঁচ বৎসরের ySəbr দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comািড়", "*******